শিশু নিগ্রহকারীকে ক্ষমা

জনরোষে পদত্যাগ হাঙ্গেরির প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্টের

মধ্য ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরির প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাককে পদত্যাগে বাধ্য করেছে দেশটির জনগণ। দিন দিন প্রেসিডেন্টের প্রতি জনগণের ক্ষোভের আগুন বৃদ্ধি পাচ্ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নবম বৃহত্তম এবং সবচেয়ে জনবহুল হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট শিশুদের নিগ্রহকারীকে ক্ষমা করার পরই জনরোষের মুখে পড়েছিলেন। ক্রমাগত তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। বিক্ষোভ থামাতে বাধ্য হয়ে ক্ষমতায় বসার মাত্র দুই বছরের মাথায় ক্যাটালিনকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।

মাত্র ৪৬ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাক সম্প্রতি হাঙ্গেরির একটি টিভি চ্যানেলে নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে রয়েছেন। ক্ষমতায় বসার পরের বছর (২০২৩) তার নেওয়া একটি সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দেশে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও তিনি এক ধারাবাহিক শিশু নিগ্রহকারীকে ক্ষমা করেছেন। প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত হাঙ্গেরিয়ানরা মেনে নিতে পারেননি। তাই তার পদত্যাগের দাবিতে দেশটিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

ক্যাটালিন গত বছরের এপ্রিলে ক্ষমা প্রদর্শন করে অপরাধীর সাজা লাঘব করেছিলেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিচার চলাকালে আদালতে শিশু নিগ্রহের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সরকার পরিচালিত একটি হোমে তিনি শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন চালাতেন। গোপনে দীর্ঘ দিন ধরে এই কাজ করে আসছিলেন তিনি। পরে ধরা পড়েন এবং আদালত বিচারে তার শাস্তির নির্দেশ দেন। আট বছরের সাজা হয়েছিল ওই অপরাধীর। ক্যাটালিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে সেই সাজা কমিয়ে দিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ক্যাটালিন নোভাকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হাঙ্গোরিতে- সংগৃহীত

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে গিয়ে ক্যাটালিন বলেন, আমি একটা ভুল করে ফেলেছি। আমার সিদ্ধান্তে অনেকে ব্যথিত হয়েছেন। ভুল বার্তা গেছে সমাজের কাছে। তাই আমি প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দিচ্ছি। হাঙ্গেরির প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হিসাবে ২০২২ সালে শপথ নিয়েছিলেন ক্যাটালিন। তার আগে তিনি ক্ষমতাসীন দল ফিডেসের মন্ত্রী ছিলেন।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল ফিডেস ২০১০ সাল থেকে হাঙ্গেরির ক্ষমতায় রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে হাঙ্গেরির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ক্যাটালিন। তার সিদ্ধান্তে ক্ষমতাসীন দলও অস্বস্তিতে পড়েছিল। দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে। জনগণের দাবির কাছে মাথানত করে পদত্যাগ করেছেন ক্যাটালিন। সূত্র:  সিএনএন, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট ইউকে।