গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সাগরপথে লিবিয়া হয়ে ইউরোপ যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জনই ছিল বাংলাদেশি। ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকায় অগ্নিকাণ্ডে এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। নৌকাডুবিতে মৃত্যুবরণকারী আট বাংলাদেশি নাগরিকের মরদেহ বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে দেশে পৌঁছাবে।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, শববাহী কফিনগুলো সৌদিয়া এয়ারলাইনসের ফ্লাইটযোগে ২ মে দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছার কথা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) লিবিয়ায় নিযুক্ত ও তিউনিসিয়ার অনাবাসিক দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশারের উপস্থিতিতে মিশনের কর্মকর্তারা মরদেহগুলো তিউনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শেষরাতের দিকে এ দুর্ঘটনার পর ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তিউনিসিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় নগর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে মরদেহের সুরতহাল, শনাক্তকরণ, দেশি সংস্থার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা, মৃত্যু এবং মেডিকেল সনদ ইস্যু সম্পন্ন করেন।
পাশাপাশি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা উইং মরদেহ ফিরিয়ে আনতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে। স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার মেটানো হচ্ছে।
লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস নিহত আট বাংলাদেশির পরিচয় জানিয়েছে। তারা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ির নয়ন বিশ্বাস, উপজেলার খালিয়ার মামুন সেখ ও সজল, উপজেলার বাজিতপুর নতুনবাজারের কাজি সজীব ও উপজেলার কবিরাজপুরের কায়সার, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাগদীর রিফাত, উপজেলার দিগনগরের রাসেল এবং গঙ্গারামপুর গোহালার ইমরুল কায়েস ওরফে আপন।
জুয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপে যাত্রাপথে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালকসহ নৌকাটি তিউনিসীয় উপকূলে ডুবে গেলে জীবিত উদ্ধার হয় ৪৪ জন। তাদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি ও পাকিস্তানের ৮, সিরিয়ার ৫, মিসরের ৪ জন। নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জন বাংলাদেশি ও অন্যজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে শনাক্ত হয়েছেন।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের মোট ৫২ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে নৌকাটি লিবিয়ার উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে সাগরে আগুন ধরে যায়।