ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ব রাজনীতি। এক দিকে চীন-রাশিয়া ইরানের প্রেসিডেন্টের জন্য শোক প্রকাশ করে তাকে ভালো বন্ধু বলে আখ্যায়িত করেছে। আর অন্য দিকে তার মৃত্যুতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। এতেই সন্দেহের তীর উঠছে ইরানের চিরবৈরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকে।
ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের এই ঘটনা এমন এক সময় ঘটল যখন আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলার মতো অনেক বিষয় রয়েছে। লেবানন, সিরিয়া, ইরাক এবং ইয়েমেনজুড়ে ইরানের প্রক্সি নেটওয়ার্ক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। বিশেষ করে ইসরায়েল এবং হামাসের চলমান যুদ্ধের মাঝে আঞ্চলিক এই পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ এক প্রান্তে পৌঁছেছে। ইরানের নেতৃত্ব নিয়ে যেকোনও ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হলে তা এসব গোষ্ঠীকে সম্ভাব্য বিস্তৃত সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ব্রিটিশ প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান এবং ইসরায়েলের ঐতিহাসিক বৈরী সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পেছনে-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল জড়িত থাকতে পারে বলে কিছু ইরানি সন্দেহ করছেন। দামেস্কে ইসরায়েলের একজন ইরানি জেনারেলকে হত্যা ও পরবর্তীতে ইসরায়েলে ইরানের শত শত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় সৃষ্ট সাম্প্রতিক উত্তেজনা বিবেচনায় এই তত্ত্বটি অনেকের মনোযোগ কেড়েছে।
ইরানের স্বার্থের বিরুদ্ধে চোরাগোপ্তা এবং নিখুঁত অভিযান চালানোর জন্য ইসরায়েলের দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ব্যাপক পরিচিতি আছে। যদিও ইসরায়েলি এই গোয়েন্দা সংস্থা কখনোই কোনো রাষ্ট্রের প্রধানকে লক্ষ্যবস্তু বানায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকেই সন্দেহ করছেন।
এমন পরিস্থিতিতে, প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া দেশটিতে পাঁচ দিনের শোক প্রকাশ করা হয়েছে। দেশজুড়ে চলছে শোকের মাতম। ইব্রাহিম রাইসি ছিলেন আয়াতুল্লাহর আলী খামেনির খুবই ঘনিষ্ঠ।
তথ্য সূত্র: রয়র্টাস, দ্য ইকোনমিস্ট ও বিবিসি।