থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতোংতার্ন বরখাস্ত

থাইল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী পেতোংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে তার একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) আদালতের রায়ে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর আগে ১ জুলাই আদালত তার দায়িত্ব স্থগিত করেছিলো।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে, পেতোংতার্নকে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘আঙ্কেল’ বলে সম্বোধন করতে শোনা যায়। এ সময় তিনি থাই সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেন এবং বলেন, আমার সেনাদের কারণেই কম্বোডিয়ার এক সেনা প্রাণ হারিয়েছে, আমি দুঃখিত। এই মন্তব্য ফাঁস হওয়ার সময় দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনা চলছিল। ফাঁসের কয়েক মাস পর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেঁধে যায় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে, যা অবসান ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায়।

ফোনকলের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ ছিল পেতোংতার্নের বলা, যা কিছু দরকার, আমাকে বলবেন। আমি দেখব বিষয়টা। এ বক্তব্যকে ঘিরে অভিযোগ ওঠে তিনি থাইল্যান্ডের জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছেন।

বিরোধীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি দেশের সেনাবাহিনী ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ঘটনার পর পেতোংতার্ন থাইল্যান্ডবাসীর কাছে ক্ষমা চান, এবং দাবি করেন, তিনি কৌশলগত কারণেই এমন কথা বলেছেন যাতে দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমিত হয়। তবে জাতীয়তাবাদী উত্তেজনার মধ্যে সেই ব্যাখ্যা গ্রহণ করেনি আদালত বা জনমত।

২০২৪ সালের আগস্টে দায়িত্ব নিয়ে ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পেতোংতার্ন। তিনি থাই রাজনীতির আলোচিত সিনাওয়াত্রা পরিবারের সদস্য যে পরিবার বহু বছর ধরে দেশটির রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে মাত্র এক বছরেই শেষ হলো তার প্রধানমন্ত্রিত্বের অধ্যায়। এখন তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় রয়েছেন, যদিও তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।