চীনে মাফিয়া মিং পরিবারের ১৬ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। এই মাফিয়া পরিবারটি প্রায় এক দশক ধরে মিয়ানমার-চীন সীমান্তবর্তী শান রাজ্যে জুয়া, মাদক, প্রতারণা ও অপরাধচক্র পরিচালনা করতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শান রাজ্যের লাউকাই শহরকে জুয়া, মাদক ও প্রতারণার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তরিত করার অভিযোগ রয়েছে চারটি প্রভাবশালী মাফিয়া পরিবারের ওপর। সেই চার পরিবারগুলোর মধ্যে একটি মিং পরিবার। ২০২৩ সালে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কঠোর অভিযান চালিয়ে এসব পরিবারের অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে চীনের হাতে তুলে দেয়।
সিসিটিভি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পূর্বাঞ্চলীয় ওয়েনঝো শহরে মোট ৩৯ জন মিং পরিবারের সদস্যের রায় ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড- যার মধ্যে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দুই বছরের জন্য স্থগিত থাকবে, ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, বাকিদের ৫ থেকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালত জানিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে মিং পরিবার এবং অন্যান্য অপরাধী গোষ্ঠী টেলিযোগাযোগ প্রতারণা, অবৈধ ক্যাসিনো, মাদক পাচার ও দেহ ব্যবসাসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এসব প্রতারণা ও জুয়া থেকে তারা ১০ বিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ১৭ হাজার ৬৯ কোটি টাকা) আয় করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে।
অভিযোগ রয়েছে, মিং পরিবারসহ চারটি মাফিয়া পরিবারের প্রতিটি ক্যাসিনো প্রতিবছর কয়েক বিলিয়ন ডলারের অবৈধ লেনদেন করতো।
জাতিসংঘ লাউকাই অঞ্চলকে ‘স্ক্যামডেমিক’ বা ‘প্রতারণার ঘাঁটি’ আখ্যা দিয়েছে, যেখানে হাজার হাজার বিদেশিকে প্রতারণার কাজে বাধ্য করা হয়েছিল। সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল ‘ক্রাউচিং টাইগার ভিলা’ নামে একটি কম্পাউন্ড। এই কম্পাউন্ডে অন্তত ১০ হাজার কর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হতো।
আদালতের নথিতে আরও বলা হয়, কর্মীদের মধ্যে কেউ পালাতে চাইলে মিং পরিবারের সদস্যরা তাকে গুলি চালাত, যাতে ওই ব্যক্তি চীনে ফিরে যেতে না পারেন। সূত্র : বিবিসি।