ক্যামেরুনের বিরোধীদলীয় নেতা ইসা চিরোমা বাকারি নিজের নিরাপত্তার জন্য গাম্বিয়ায় পালিয়ে গেছেন বলে জানায় গাম্বিয়া সরকার। এর আগে তিনি ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন।
চিরোমা বাকারি দাবি করেছেন, তিনিই ১২ অক্টোবরের নির্বাচনের আসল বিজয়ী। তিনি অভিযোগ করেন, ৯২ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট পল বিয়াকে অষ্টমবারের মতো ক্ষমতায় আনতে নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে।
গাম্বিয়ার তথ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, চিরোমা বাকারি ৭ নভেম্বর সেখানে পৌঁছান এবং তাকে মানবিক কারণে সেই দেশে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ক্যামেরুন সরকার নির্বাচনের পর সহিংস বিক্ষোভে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিল। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়নের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করেছেন।
সরকারের তথ্যমতে, নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। তবে অন্যান্য সংস্থা মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে জানিয়েছে।
চিরোমা বাকারি বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচনে তার ‘বিজয়’ স্বীকৃত না হওয়া পর্যন্ত তিনি পল বিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট বিয়া ৪৩ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন। জালিয়াতির অভিযোগের মধ্যেই ৫৩.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে, চিরোমা বাকারি ৩৫.২ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।
তার প্রতিরোধ কৌশলের মধ্যে রয়েছে রাজপথে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া এবং শহরগুলোকে অচল করে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘ভুতুড়ে শহর’ কর্মসূচি পালন করা।
গাম্বিয়া সরকার তার উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত তিনি কোথায় ছিলেন তা রহস্যই ছিল। যদিও ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি এই অঞ্চলের অন্য কোনো দেশে পালিয়ে গেছেন।
গাম্বিয়া সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে, আফ্রিকান সংহতির চেতনায় এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাকে সম্পূর্ণরূপে মানবিক কারণে সাময়িকভাবে গাম্বিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ক্যামেরুনের নির্বাচন-পরবর্তী উত্তেজনা নিরসনে একটি শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধানের আলোচনা চলছে।
গাম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের দেশকে ‘কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কার্যকলাপের ভিত্তি হিসেবে’ ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
বিবিসি এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ক্যামেরুন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় গাম্বিয়ার প্রধান বিরোধী দল ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি (ইউডিপি) সরকারের সমালোচনা করেছে। বাকারির আগমনের ঘোষণা রোববার পর্যন্ত আটকে রাখায় তারা এই সমালোচনা করে।
দলটি বলেছে, এটি ‘স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং গাম্বিয়ার জনগণের জানার অধিকারের প্রতি সম্মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে’।
তবে দলটি গর্ব প্রকাশ করে বলেছে, চিরোমা বাকারি গাম্বিয়ায় ‘নিরাপদ আশ্রয়’ খুঁজে পেয়েছেন। তারা আরও যোগ করে, স্বৈরাচার কীভাবে কাজ করে এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়' সে সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল।সূত্র: বিবিসি