লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, প্রথমবারের মতো দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ নৌঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা। একই সঙ্গে তেল আবিবের একটি সামরিক স্থাপনাতে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে হামলা করা হয়েছে। খবর কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার।
তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তারা জানায়, কেন্দ্রীয় ও উত্তরাঞ্চলে, বিশেষ করে তেল আবিবের আশপাশে, বিমান হামলার সতর্কসংকেত শোনা গেছে।
বাহিনীটি আরও জানায়, উত্তরে হিজবুল্লাহর ছোড়া ৫৫টি প্রক্ষেপণের মধ্যে কয়েকটি প্রতিরোধ করা হয়েছে। লেবানন থেকে আসা মোট ১৬০টি উড়ন্ত বস্তু ইসরায়েলে আঘাত করেছে।
ইসরায়েলের মেডিক্যাল সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, এসব হামলায় কমপক্ষে ১১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা মাঝারি থেকে গুরুতর।
এই হামলার একদিন আগে ইসরায়েলের একটি আঘাতে মধ্য বৈরুতে ২৯ জন নিহত এবং ৬৬ জন আহত হন। লেবাননের অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এ হামলাকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার ওপর আঘাত হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে একটি সরাসরি রক্তাক্ত বার্তা বলে অভিহিত করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার জন্য চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা একমাত্র সমাধান দেখছি: অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৭০১ সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন।
ইইউ দক্ষিণ লেবাননে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের জন্য লেবাননের সেনাবাহিনীকে ২০০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এই চুক্তি কার্যকর হলে, ২০০৬ সালের যুদ্ধে গৃহীত জাতিসংঘের রেজুলেশন অনুযায়ী লেবাননের লিটানি নদীর দক্ষিণ থেকে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করবে। সেই অঞ্চলে লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীরা টহল দেবে।
লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের আল-আমরিয়েহ অঞ্চলে ইসরায়েলের একটি হামলায় একজন সেনা নিহত এবং ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন গুরুতর আহত।
লেবাননের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি সেনা নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, এসব হামলা দুর্ঘটনাবশত ঘটেছে এবং লেবাননের সেনাবাহিনী তাদের অভিযান লক্ষ্য নয়।
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫০০ জন নিহত এবং ১২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ৯০ জন সেনা এবং ৫০ জনেরও বেশি বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের উত্তরের অঞ্চলগুলো থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।