যেকোনো মূল্যে গাজার নিয়ন্ত্রণ চায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)। এর জন্য হামাসের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে প্রস্তুত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফকে এমন বার্তা দিয়েছেন পিএ’র সিনিয়র কর্মকর্তা হুসেইন আল-শেখ। খবর মিডল ইস্ট আই’র।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
প্রতিবেদন মতে, গাজায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করেন হুসেইন আল-শেখ। ওই বৈঠকেই উটটকফের কাছে গাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন হুসেইন।
হুসেইনকে পশ্চিম তীরভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট প্রবীণ রাজনীতিক মাহমুদ আব্বাসের উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। তিনিই এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁতাত করে হামাসের কাছ থেকে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য হল, এমন একটি কমিটি গাজা শাসন করবে যার বেশিরভাগ সদস্যই হবে উপত্যকার বাইরের। মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে রিয়াদে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূতের সঙ্গে হুসেইনের বৈঠকের ব্যবস্থা করে দেয় সৌদি আরব।
বৈঠকটি অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের দূত উইটকফ রামাল্লায় বৈঠকে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর সৌদি কর্তৃপক্ষকে বৈঠক আয়োজন অনুরোধ করে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। হুসেইন আল-শেখের সাথে বৈঠকের পর উইটকফ ইসরাইলে যান এবং এর নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করেন।
হুসেইন ও নেতানিয়াহুর সাথে সাক্ষাতের পরদিন গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) উইটকফ গাজা সফর করেন। যা গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো মার্কিন কর্মকর্তার গাজা সফর।
মিডল ইস্ট আই’র প্রতিবেদন মতে, গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেখানে যে কমিটি শাসন করবে তার প্রধান কে হবেন সেটাও ঠিক করে ফেলেছে পিএ। মাহমুদ আব্বাসের দীর্ঘদিনের পরামর্শক জিয়াদ আবু আমর হবেন গাজার শাসক। তাকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ মুস্তাফার ডেপুটি নিযুক্ত করা হবে। তবে তাকে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হবে।
আবু আমর ১৯৫০ সালে গাজা উপত্যকায় জন্মগ্রহণ করেন। পিএ’র আশা, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন। কারণ তিনি একজন মার্কিন নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ২০১৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মতো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনীর সাথে ১৫ মাসের ভয়াবহ যুদ্ধের পর গোষ্ঠীটি এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে। শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিনের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় ভূখণ্ডটির ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব আরও শক্ত করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও বন্দি বিনিময়কালে তাদের সেই প্রভাবের অনেকটাই পরিলক্ষিত হয়েছে।
তবে ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, হামাসকে কোনোভাবেই গাজা শাসনের সুযোগ দেয়া হবে না। একই কথা বলছেন মার্কিন কর্মকর্তারাও। সম্প্রতি ট্রাম্পের শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, হামাস আর কখনও গাজা শাসন করবে না।