হুমকির মুখে আদানির বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ লেনদেন ও প্রতারণার মামলার জেরে ভারতীয় ধনকুবের, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি মহা বিপাকে পড়েছেন। বিভিন্ন দেশে আদানির চুক্তিতে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। অনেক দেশ চুক্তি বাতিল করে দিচ্ছে, এমন খবরও মিলছে।

মার্কিন প্রসিকিউটররা জালিয়াতির অভিযোগ তোলার পর আদানি গ্রুপের সঙ্গে করা বড় দুটি চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে কেনিয়া। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় আদানির একটি কয়লা খনিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদশের বিদ্যুত চুক্তিও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে আদানি গ্রুপকে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে আদানির বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ডলার ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্র ও বিনিয়োগকারীদের কাছে তথ্য গোপন করে বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টার অভিযোগ আনা হলেও আদানি গ্রুপের আইনজীবীরা অবশ্য একে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করছেন।

এদিকে, বাংলাদেশের সঙ্গে অসম বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়েও এখন কাঠগড়ায় আদানি গ্রুপ। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে এ চুক্তি নিয়ে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রুল জারির পাশাপাশি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছে। রুলে অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থি দাবি করে চুক্তিটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দুর এক খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আদানি গ্রুপের চুক্তিটি শুরু থেকেই ছিল বিতর্কিত। কেননা, স্বাভাবিক নিয়ম মেনে এই চুক্তি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনে আদানিকে নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষকাণ্ডে নাম জড়ানোর পরেই গৌতম আদানিকে গ্রেপ্তার করার দাবিতে সরব হয়েছেন কংগ্রেস ও শিবসেনার শীর্ষ নেতারা। এ ছাড়া ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও আদানিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। 

রাহুল আরও বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও গৌতম আদানি দুজনই দুর্নীতিগ্রস্ত। এখনই আদানিকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। কিন্তু আদানিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা মোদির নেই। কারণ, তিনি নিজেই রয়েছেন আদানির নিয়ন্ত্রণে। 

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আদানির কর্মীরা আদানি গ্রুপের কারমাইকেল কয়লা খনির কাছে আদিবাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের বিভিন্নভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নাগানা ইয়ারবাইনের সিনিয়র কালচারাল কাস্টোডিয়ান আদ্রিয়ান বুরাগুব্বা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে আদানির কাছ থেকে বৈষম্য সহ্য করেছি, আর সহ্য করা যাচ্ছে না।’