যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত এক রাজকীয় নৈশভোজে একই টেবিলে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার বিরুদ্ধে মামলার আসামি হিসেবে পরিচিত মিডিয়া মোগল রুপার্ট মারডক। ভোজে মারডকের উপস্থিতি সবাইকে বিস্মিত করলেও, ট্রাম্প ছিলেন স্বভাবসুলভ উচ্ছ্বসিত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলার আয়োজনে উইন্ডসরের সেন্ট জর্জেস হলে এই নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আমন্ত্রিত ছিলেন প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা।
ভোজের টেবিল ছিল ট্রাম্পের হেলিকপ্টারের চেয়েও ২.৭ গুণ বড়। সাজানো হয়েছিল ১৩৯টি মোমবাতি, ব্যবহৃত হয় ১,৪৫২টি ছুরি-চামচ-তৈজসপত্র। খাবার পরিবেশন করেছেন প্রায় ১০০ কর্মী।
গত জুনে ট্রাম্প ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা করেন রুপার্ট মারডক ও তার মালিকানাধীন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, পত্রিকাটি ট্রাম্পকে যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে যুক্ত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০০৩ সালে ট্রাম্প এপস্টেইনকে জন্মদিনের চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে নারীর দেহাবয়ব আঁকা ছিল। ট্রাম্প অবশ্য তা অস্বীকার করে দাবি করেন, তিনি এমন চিঠি লেখেননি কিংবা স্বাক্ষর করেননি।
ট্রাম্পের জন্য আয়োজিত এই ভোজে রুপার্ট মারডকের উপস্থিতি ছিল অপ্রত্যাশিত। অতিথিদের তালিকা যুক্তরাজ্য সরকার ও হোয়াইট হাউস যৌথভাবে চূড়ান্ত করেছিল, তবে আসন বিন্যাস রাজপরিবারের সিদ্ধান্তে নির্ধারিত হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ভোজে মারডক ও ট্রাম্পের মাঝে কোনো প্রত্যক্ষ বাক্যালাপ হয়নি, দুজন ছিলেন দূরবর্তী আসনে। তবে এমন এক পরিস্থিতিতে দুজনের উপস্থিতি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভোজে উপস্থিত ছিলেন টেক জায়ান্ট এনভিডিয়ার জেনসেন হুয়াং, ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান, অ্যাপলের টিম কুকসহ মার্কিন প্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। এতে ট্রাম্পের সফর ঘিরে যুক্তরাজ্যে বিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তি বিনিয়োগ চুক্তির ইঙ্গিতও মিলেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে এপস্টেইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনকে বরখাস্ত করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। ঠিক সেই সময়ে ট্রাম্প-মারডকের রাজকীয় ভোজে একসাথে উপস্থিতি এপস্টেইন বিতর্ককে আবারও সামনে এনেছে।