ক্যারিবীয় অঞ্চলে চলমান সংকট নিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। তবে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে তিনি মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি।
যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছুদিন ধরে ভেনেজুয়েলার উপকূল ও লাতিন আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানগুলোতে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে আসছে।
তবে নিকোলা মাদুরো বারবার অভিযোগ করেছেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে এসব হামলা চালানো হচ্ছে এবং সেখানে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি জোরদার করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না, আমি সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না; আমি কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছি না।’
তবে মাদুরোর সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন কি না—এ প্রশ্নে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, সম্ভবত আমি সঙ্গে কথা বলব। আমি সবার সঙ্গেই কথা বলি।’ সম্ভাব্য মার্কিন হামলা ঠেকাতে মাদুরো কোনো প্রস্তাব দিতে চাইলে, সেসব প্রস্তাবও শোনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এসব কথা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আকর্ষণীয় কোনো প্রস্তাব পেলে তিনি ক্যারিবীয় অঞ্চলে উত্তেজনা কমানোর কথা বিবেচনা করতে পারেন। তবে একই সঙ্গে তার প্রশাসন নাটকীয়ভাবে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংঘাত উসকে দিতেও প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তিনি কলম্বিয়ার কোকেন কারখানাগুলো ধ্বংস করতে চান। তবে সে দেশে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের ঘোষণা দেননি।
আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবীয় সাগরে একের পর এক নৌযানে হামলা শুরু করলে এমন উত্তেজনা শুরু হয়। খুব সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও হামলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখী এসব নৌযানকে পাচারকারীরা মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করছে।
মার্কিন কর্মকর্া বলছেন, চলতি সপ্তাহে ২০তম হামলাটি হয়েছে। সর্বশেষ হামলায় চারজনসহ এসব হামলায় সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ জন নিহত হয়েছেন। বোমা হামলার শিকার নৌযানগুলোতে সত্যিই মাদক বা মাদক কারবারিরা ছিল কি না কিংবা নৌযানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছিল কি না, তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
এ ছাড়া মার্কিন কর্মকর্া তাঁদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কোনো ধরনের আইনি যুক্তি উপস্থাপন করেননি। বিশেষজ্ঞদের অনেকে একে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন।
মূলত ওয়াশিংটনের অভিযোগ হলো, মাদুরো মাদকচক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি।