ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শতাধিক যুদ্ধবন্দির বিনিময় হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় এ বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫০ জন ইউক্রেনীয় বন্দির বিনিময়ে সমান সংখ্যক রুশ সেনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ১৮৯ জন ইউক্রেনীয় নাগরিক তাদের মাটিতে ফিরেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন আজভস্টল ও মারিউপোলের প্রতিরক্ষাকর্মী, চেরনোবিল পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মী এবং কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের স্ন্যাক আইল্যান্ডের সেনারা।
উত্তর ইউক্রেনের একটি হাসপাতালে, প্রচণ্ড শীতের মধ্যে প্রিয়জনদের ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন অনেক উদ্বিগ্ন স্বজন। আলিনা নামে এক নারী মারিউপোল প্রতিরক্ষার সময় বন্দি হওয়া তার স্বামী ওলেক্সান্ডারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, এতদিন ধরে অপেক্ষা করেছি। অবশেষে তাকে দেখতে পাব।
এটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৫৯তম বন্দি বিনিময়। এর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বিনিময়গুলোর একটি। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ইউক্রেনের সেনা, বর্ডার গার্ড, ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য এবং নৌবাহিনীর কর্মী ছিলেন। অনেকেই আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন এবং তাদের অনেকের শারীরিক অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা।
যদিও এই বিনিময়ে কিছু পরিবার স্বস্তি পেয়েছে, তবে হাজারো ইউক্রেনীয় এখনও রাশিয়া ও দখলকৃত ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্দি। কিয়েভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বন্দি বিনিময়ের আলোচনা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। কারণ রুশ বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করছে।
ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দিদের সংখ্যা প্রকাশ না করলেও ধারণা করা হয়, রাশিয়ার হাতে বর্তমানে ৮ হাজারের বেশি ইউক্রেনীয় বন্দি রয়েছেন।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে মারিউপোলের দুজন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা রুশ বন্দিদশা থেকে সবাইকে মুক্ত করতে কাজ করছি। কাউকে ভুলে যাব না।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিপ্রাপ্ত রুশ সেনাদের বেলারুশে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা সেবা ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
রাশিয়ার মানবাধিকার কমিশনার তাতিয়ানা মস্কালকোভা একটি ভিডিও বার্তায় জানান, খুব শিগগিরই আমাদের যোদ্ধারা তাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের সঙ্গে মিলিত হবেন এবং নিজ ভূমিতে নববর্ষ উদযাপন করবেন।