খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে পোপ ফ্রান্সিসের স্বাস্থ্যের অবস্থা সংকটজনক বলে জানানো হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কিছুক্ষণ আগে কার্ডিনাল ফারেল, দুঃখের সাথে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রিয় ভাই ও বোনেরা, গভীর দুঃখের সাথে আমাদের পবিত্র পিতা ফ্রান্সিসের মৃত্যু ঘোষণা করছি।
পোপ ফ্রান্সিস দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন। তরুণ বয়সে তার একটি ফুসফুস আংশিক অপসারণ করা হয়েছিল। ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে রোমের গেমেলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু হয়ে পরে তা ডাবল নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। হাসপাতালটিতে তিনি ৩৮ দিন ছিলেন—যা তার ১২ বছরের পোপজীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ চিকিৎসা ছিল।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ, এক বৃষ্টিভেজা রাতে আর্জেন্টিনার বাসিন্দা হোর্হে মারিও বারগোলিও পোপ হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে তিনি গরিবদের পাশে দাঁড়ানো, শরণার্থীদের আলিঙ্গন এবং সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসার মাধ্যমে ভিন্নধর্মী এক পোপ হিসেবে পরিচিত হন।
তবে তার খোলামেলা বক্তব্য, এলজিবিটিকিউ+ ক্যাথলিকদের প্রতি সহানুভূতি, পুঁজিবাদের সমালোচনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের কারণে অনেক রক্ষণশীলদের অসন্তুষ্ট করেন। ২০১৮ সালে চিলির এক পুরোহিতের যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন, যা তার পোপজীবনের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
করোনাভাইরাস মহামারির সময় পুরো বিশ্ব যখন লকডাউনে, তখন ফাঁকা সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই একই নৌকায় আছি—দুর্বল ও বিভ্রান্ত। আমাদের একে অপরকে সহানুভূতি দিয়ে পাশে থাকতে হবে।
পোপ ফ্রান্সিস তার সরলতা, সহানুভূতি এবং গঠনমূলক চিন্তাভাবনার জন্য বিশ্বজুড়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তার মৃত্যুতে ক্যাথলিক চার্চসহ বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।