গাজা উপত্যকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরুর প্রাক্কালে ইসরায়েল লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনাকে তলবের প্রস্তুতি নিয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এই রিজার্ভ সেনাদের মোতায়েনের মাধ্যমে ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে কর্মরত নিয়মিত সেনাদের গাজা সীমান্তে পাঠানো হবে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি, তবে আভাস মিলছে শিগগিরই বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
রোববার (৪ মে) ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় সামরিক অভিযানের সম্প্রসারণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার টিকিয়ে রাখতে এবং ডানপন্থি মিত্রদের সন্তুষ্ট রাখতে গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নিচ্ছেন।
এদিকে যুদ্ধবিরতির অন্যতম প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতারের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহু কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন। তিনি কাতারের মধ্যস্থতাকে ব্যর্থ আখ্যা দিয়ে বলেন, কাতারকে যদি দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে শান্তির বদলে সংকট আরও বাড়বে। নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কারণ কাতার বহুদিন ধরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত সাত মাসের ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫২,৪৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১,১৮,৩৬৬ জন। গাজার মিডিয়া অফিসের মতে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো নিখোঁজ ব্যক্তিকে ধরলে মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হন। সেই ঘটনার পর থেকেই ইসরায়েল গাজায় ধারাবাহিক সামরিক অভিযান ও কঠোর অবরোধ চালিয়ে আসছে।