ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কির সংসদ ভবনে মারা গেছেন দেশটির তরুণ সংসদ সদস্য এমেলি পেলটোনেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৩০ বছর। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে সংসদ ভবনের ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ফিনল্যান্ডের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম YLE-এর খবরে বলা হয়েছে, এমেলি পেলটোনেন আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তার মৃত্যুতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ইঙ্গিত নেই।
সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই তরুণ এমপি দক্ষিণ ফিনল্যান্ডের উউসিমা অঞ্চল থেকে ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন ফিনল্যান্ডের রাজনৈতিক অঙ্গন।
সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ারপারসন টিটি তুপুরাইনেন বলেন, তিনি আমাদের সম্প্রদায়ের অত্যন্ত প্রিয় একজন সদস্য ছিলেন। তাকে আমরা ভীষণভাবে মিস করব। এত অল্প বয়সে এক তরুণ প্রাণের অবসান সত্যিই মর্মান্তিক।
প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অরপো তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে দিনটির বাকি সময়ের জন্য সব সরকারি রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। এছাড়া তিনি এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
সংসদের স্পিকার ইউসি হাল্লা-আহো এক্সে লিখেছেন, পেলটোনেন ছিলেন একজন প্রিয় সহকর্মী, যিনি সব দলের কাছেই সম্মানিত ছিলেন।
এমেলি পেলটোনেন খুব অল্প বয়সেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি ইয়্যারভেনপা শহরের সিটি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং ২২ বছর বয়সে সিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান, যা ছিল ঐ পদে দায়িত্ব নেওয়া সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তির রেকর্ড।
গত জুনের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানান, কিডনির সংক্রমণজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সংসদীয় কাজ থেকে কিছুদিন বিরতিতে ছিলেন।
তার পোস্টে লেখা ছিল, হাসপাতালে শিরায় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে, যা সময়সাপেক্ষ। এখন আমি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছি, তবে চিকিৎসা ছুটিতে আছি এবং পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করছি।
সংসদ ভবনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ও নিরাপদ জায়গায় একজন তরুণ এমপির এমন মৃত্যুর খবরে দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে হতবাক প্রতিক্রিয়া। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা আরও জোরালো হয়েছে।
দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে, তবে প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে।