যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে পর্তুগাল। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হলো ইউরোপের এই দেশটি।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রাক্কালে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল।
তিনি বলেন, পর্তুগাল এখন থেকে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। এটি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক, ধারাবাহিক এবং অপরিহার্য অঙ্গ।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত সমাধান হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকেই সমর্থন জানিয়ে রাঞ্জেল বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ এটাই, এবং এই পথে এগিয়ে যেতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, হামাসকে গাজা বা অন্য কোথাও কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দেওয়া যাবে না। তিনি গাজায় আটকে থাকা সব জিম্মির মুক্তির দাবিও জানান এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণের তীব্র নিন্দা জানান।
রাঞ্জেল বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া মানে এই নয় যে গাজার মানবিক বিপর্যয় মুছে গেছে। বরং এটি একটি দায়িত্বশীল অবস্থান। আমাদের লক্ষ্য, ন্যায়বিচার ও শান্তির ভিত্তিতে একটি স্থায়ী সমাধান।
পর্তুগালের সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ফিলিস্তিনের নেতারা।
ফাতাহ নেতৃবৃন্দের একজন মোহাম্মদ শটাইয়ে বলেন, এটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে একটি মাইলফলক। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটি বড় অর্জন।
একজন ফিলিস্তিনি শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই স্বীকৃতি গাজার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা। একই সঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, যেন তারা ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেয়।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনো গঠিত হবে না। যারা এই স্বীকৃতি দিয়েছে তারা সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে। এই ধরনের সিদ্ধান্তের পরিণতি ভালো হবে না।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থন বাড়লেও, ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত কিছু দেশ এখনো এই সিদ্ধান্তে দ্বিধান্বিত।