সিএএ আইনের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকরের ঘোষণার পর থেকেই ভারতজুড়ে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। তবে বিজেপি সরকারের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভীত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, এই আইনে কোনো নাগরিকের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো বিধান এতে নেই।

মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, আইনটির মাধ্যমে বিজিপি সরকার ধর্মীয় বৈষম্যকে আইনি বৈধতা দিয়েছে। সিএএ ভারতীয় ধর্মীয় বৈষম্যহীনতার ওপর আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি। সেই সঙ্গে এটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এবং বেমানান বলেছে তারা। তবে প্রতিবাদের মুখে আইনটি পরিবর্তন করা হবে না বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন অমিত শাহ। তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধীপক্ষ বিষয়টি নিয়ে মিথ্যার রাজনীতি করছে। দেশের সংখ্যালঘুদের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নেই। কারণ, এতে কোনো নাগরিকের অধিকার ফিরিয়ে নেওয়ার মতো কোনো বিধান নেই। 

বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মুখে সিএএ আইন বাতিলের কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মুসলমানদেরও সংবিধান অনুসারে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার অধিকার আছে। এটিকে বাতিল করা অসম্ভব। আমরা এটি নিয়ে সারা দেশে সচেতনতা সৃষ্টি করব।

একই কথা জানান কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, আইনটির মাধ্যমে ভারতে বসবাসকারী কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না। 

সিএএ আইন এমন সময়ে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু হবে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) কংগ্রেসের সংসদ সদস্য নকুল নাথ অভিযোগ করেন, এ নির্বাচনে মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে রাখতেই সিএএসহ কয়েকটি আইন এনেছে বিজেপি।

এ অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা অমিত শাহ বলেন, এটি আনুষ্ঠানিকভাবে আইন কার্যকরের ঘোষণামাত্র। তাই এখান থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের প্রশ্নই আসে না। এর আগে বুধবার (১৩ মার্চ) সিএএ আইনকে নোংরা ভোটব্যাংকের রাজনীতি বলে উল্লেখ করেন কেজরিওয়াল।

এদিকে সিএএর বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে দিল্লিতে তার বাসভবনের সামনে গতকাল বিক্ষোভ করেছেন হিন্দু ও শিখ শরণার্থীরা। সিএএ নিয়ে অমিত শাহর সাক্ষাৎকারের প্রতিক্রিয়ায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, তিনি (অমিত শাহ) আমার তোলা কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি। বরং আমাকে দুর্নীতিবাজ প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন।

সিএএর কড়া সমালোচনা করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, আসামের জন্য সিএএ পুরোপুরিভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। কয়েক দিন ধরে আসামে ব্যাপক প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে।