মিয়ানমারে চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটিতে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠানের এই সময় ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। খবর এএফপির।
সামরিক জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে শনিবার (৮ মার্চ) প্রকাশিত রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ জানিয়েছে, তিনি বলেছেন, ‘আমরা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছি।’
বেলারুশ সফরকালে শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ৫৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের তালিকা জমা দিয়েছে।’
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে মিনস্কে বৈঠকে জান্তা প্রধান বলেছেন, ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা বেলারুশের পর্যবেক্ষক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’
দেশজুড়ে চলমান অস্থিরতার কারণে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে জান্তা প্রধান বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের কথা বলেছেন। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মিন অং হ্লেইং বারবার বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গত জুনে তিনি বলেছিলেন, ২০২৫ সালে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চলমান সহিংসতার কারণে আগের নির্বাচনের সময়সীমা স্থগিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। মিন অং হ্লেইং জোর দিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা নেই জান্তার।
এদিকে, জান্তার অধীনে কোনও বৈধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। আর বিশ্লেষকরা বলেছেন, নির্বাচনে সামরিক বাহিনীবিরোধী গোষ্ঠীগুলো এই নির্বাচনকে লক্ষ্যবস্তু বানাতে পারে। এতে দেশজুড়ে আরও রক্তপাতের সূত্রপাত ঘটবে।
মিয়ানমারের রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা দানকারী সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বলছে, দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর হাতে ৬ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত ও ২৮ হাজারের বেশি আটক হয়েছেন।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরেই দেশটির ১ কোটি ৯৯ লাখ বা মিয়ানমারের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন হবে।