পাকিস্তানে বিমান হামলায় নারী-শিশুসহ নিহত ৩০

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির বিমানবাহিনী। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে চালানো এ হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, এই অভিযান সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) একটি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামলায় বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষও প্রাণ হারিয়েছেন এবং অনেকেই আহত হয়েছেন।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, টিটিপি সন্ত্রাসীরা একটি কম্পাউন্ডে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করে রেখেছিল। বিমানবাহিনীর টার্গেটেড হামলার পর সেখানে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েকটি ঘরবাড়িও ধসে পড়ে। এতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খাইবারের স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জাফর খান জানান, হামলায় অন্তত ১৪ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে টিটিপির দুই স্থানীয় কমান্ডার আমান গুল ও মাসুদ খান রয়েছেন। তারা ওই অঞ্চলে রাস্তার পাশে ব্যবহৃত বোমা তৈরির একটি কারখানা পরিচালনা করছিলেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, টিটিপি সাধারণ মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল এবং আশপাশের মসজিদগুলোতে অস্ত্র মজুত করে রেখেছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আহত শিশুদের স্থানীয়রা অস্থায়ীভাবে খাটে শুইয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের বের করে আনতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় মানুষ। ভিডিওতে নারী ও শিশুদের কান্না ও আহতদের আর্তনাদ মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে।

এর আগের দিন রোববার পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করে, খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলায় পরিচালিত এক অভিযানে সাতজন টিটিপি সদস্য নিহত হয়েছে। গত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পরিচালিত আরও দুটি অভিযানে মোট ৩১ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয় বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর ২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানে টিটিপির হামলা ও তৎপরতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। যদিও টিটিপি এবং আফগান তালেবান আলাদা সংগঠন, তবে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগানিস্তানে টিটিপির নিরাপদ আশ্রয় থাকায় পাকিস্তানে তাদের কার্যক্রম পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চলমান এই সংঘর্ষ ও বিমান হামলায় বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম