নেপালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জেন-জি আন্দোলনের নেতা গুরুং

নেপালের সাম্প্রতিক সরকারবিরোধী জেন-জি আন্দোলনের নেতা সুদন গুরুং দেশটির আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।   

সুদন গুরুং বলেন, তার দল একটি প্রচলিত রাজনৈতিক দল গঠনের পরিবর্তে দেশব্যাপী সমর্থকদের একত্রিত করে ‘পরিবর্তনের জন্য একটি আন্দোলন’ গড়ে তুলছে। তার নেতৃত্বাধীন জেন-জি বিক্ষোভের মুখে মাত্র দুইদিনে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির সরকারের পতন ঘটে।

পরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব নেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। দায়িত্ব নিয়েই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন তিনি। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচন।

মার্চের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, স্বার্থপর এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ববর্তী সরকারই তাদের রাজনীতিতে আসতে বাধ্য করেছে।

সুদন গুরুং বলেন, ‘তারা যদি রাজনীতিই চায়, তবে তাই পাবে। আমরা পরবর্তী নির্বাচনে লড়বো, কারণ আমরা এখন আর পিছু হটবো না।’

ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সরকারি নিবন্ধনের আওতায় আনার কথা বলে সরকার সেগুলো বন্ধ করে দিলে দেশজুড়ে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। কিন্তু এই প্রতিবাদ দ্রুতই দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ব্যাপক গণঅসন্তোষে রূপ নেয়। এই বিক্ষোভে কয়েক ডজন তরুণ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হন।

গুরুং বিশ্বাস করেন, তার আন্দোলন দেশ শাসনের জন্য প্রস্তুত। তার স্বেচ্ছাসেবকরা ইতোমধ্যে আইনি ও যোগাযোগ কমিটি গঠন করেছে এবং ডিসকর্ড ও ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সারা দেশ থেকে নীতিগত দাবি সংগ্রহ করছে।

গুরুং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নয়, বরং দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি শুধু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি, তাহলে আমাদের সঙ্গে এই যুবশক্তি থাকবে না। একসাথে আমরা আরও শক্তিশালী।’

দুর্নীতিবিরোধী এজেন্ডার বাইরেও তার আন্দোলন নেপালের পর্যটন খাতের উন্নয়ন এবং প্রতিবেশী ভারত ও চীনের সঙ্গে বাহ্যিক হস্তক্ষেপ ছাড়া সুসম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করবো। এটি হবে বাইরের কোনো শক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়া। তাদের আমাদের সম্মান জানাতে হবে। আমাদেরও তাদের সম্মান জানাতে হবে।’

আগের সরকারের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা যেন মার্চের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিচার করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত হব দুর্নীতির তদন্ত সঠিকভাবে, সঠিক সময়ের মধ্যে হবে। যেন তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে।’

নিজে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য লড়াই করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সুদান গুরুং বলেছেন, ‘আমি বলবো না আমি যোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু মানুষ যদি আমাকে বেঁছে নেয় আমি অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়াই করবো।’