বিশ্বের বড় শহরগুলোতে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। ভারতের রাজধানী দিল্লি এখন এ দূষণে সবচেয়ে শীর্ষে। এ কারণে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ এবং নাগরিকদের বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানিয়েছে, দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বর্তমানে ৪২৫-এ দাঁড়িয়েছে, যা ‘গুরুতর’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। এই মাত্রার দূষণ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং ফুসফুসের রোগীদের জন্য।
প্রতি বছর এই সময় দিল্লিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। কৃষিজ বর্জ্য পোড়ানো, ধুলাবালি, যানবাহনের ধোঁয়া ও শীতকালীন আবহাওয়ার কারণে বাতাস ভারী হয়ে পড়ে। তবে পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সরকার এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
বায়ুদূষণের প্রতিবাদে ইন্ডিয়া গেট এলাকায় শত শত মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। কেউ কেউ গ্যাস মাস্ক পরে প্রতীকীভাবে প্রতিবাদ জানান। এক ব্যানারে লেখা ছিল— ‘শ্বাস নেওয়াও এখন বিপজ্জনক’। দিল্লির খ্যাতনামা ফুসফুস বিশেষজ্ঞ ডা. গোপীচাঁদ খিলনানি জানিয়েছেন, যাদের দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগ আছে, তাদের সামর্থ্য থাকলে ৬-৮ সপ্তাহের জন্য দিল্লি ছেড়ে যাওয়াই ভালো।
All India Institute of Medical Sciences অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এআইআইএমএস) চিকিৎসক ডা. হর্ষল রমেশ সালভে বলেন, দিল্লির প্রতিটি শ্বাস এখন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন শিশুরা, বয়স্করা এবং যাদের আগেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল।
বায়ুদূষণের ফলে রাজধানীর বহু মানুষ শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালাপোড়া এবং গলা ব্যথার মতো সমস্যায় ভুগছেন।
এদিকে দ্য ল্যানসেট পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২০২২ সালে প্রায় ১৭ লাখ ২০ হাজার মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা গেছেন, যা ২০১০ সালের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে দূষণ চলতে থাকলে দিল্লি একদিন ‘অবাসযোগ্য শহরে’ পরিণত হতে পারে।
সূত্র : সিবিএস নিউজ