ঢাকা
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

বাথুয়ায় পৈতৃক বাড়িতে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা, গ্রামবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময়

আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১২:৫৬ এএম

বুধবার (১৪ মে) বিকেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শেষে নিজ গ্রাম হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়ায় পৈতৃক বাড়িতে যান। আর সেখানে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন। একান্ত আপনজন, যিনি সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কুশল বিনিময় করেন গ্রামের মানুষ।

সরকারপ্রধান হয়েও কোনো রাখঢাক রাখেননি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঞ্চে উঠে সবাইকে সালাম দিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে শুরু করেন, ‘বউত ভালা লার বেগ্গুনেরে দেখি বউত দিন বাদে এন্ডে আইলম। ছোড বেলাত এডেই আছিলম। ছোড বেলার বেক ছবি মাথার ভেতর রই গেইয়িগুই, এডে বটগাছ তলে হাট বইচতো, হাডত আইচতম। ছোড বেলাত একজনরে একজনে ঠাট্টা গরি কইতম আবদুর রশিদ টেন্ডলর হাট নজুমিয়েহাট, দুল মিয়ের জ্বালা বারি ফোরক মিয়ার মটরগাড়ি।’

(সবাইকে দেখে বেশি ভালো লাগছে। বহুদিন পর এখানে এলাম। ছোটবেলায় এখানে ছিলাম। ছোটবেলার সব ছবি মাথার ভেতর রয়ে গেছে। এখানে বটগাছতলে হাট বসত, হাটে আসতাম। ছোটবেলায় একজন আরেকজনরে ঠাট্টা করে বলতাম আবদুর রশিদ টেন্ডলের হাট নজুমিয়া হাট, দুলা মিয়ার জ্বালা ভারী, ফোরক মিয়ার মোটরগাড়ি।)

ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিনি গ্রামের স্কুলে লেখাপড়া করেন। এরপর তাঁর বাবা হাজি দুলা মিয়া সওদাগর তাঁকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে সেখানে স্কুলে ভর্তি করে দেন।

অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে চট্টগ্রামের ভাষায় বলেন ‘নজু মিয়ারহাট শর হই গিয়ে, শর বিলাত হই গিয়ে।’ ভবিষ্যতে দেশের আরও উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এসেছিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। এ সুযোগে আপনাদের সঙ্গে দেখা করে গেলাম। আমার খুব ভালো লাগছে, সবার সঙ্গে দেখা হলো। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে বিকেল পাঁচটার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাদা-দাদি ও স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন।

গতকাল দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকালে বিশেষ উড়োজাহাজে চট্টগ্রামে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি-৫) পরিদর্শন করেন এবং সেখানে বন্দর ও নৌপরিবহন খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বন্দরের অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৌঁছে বহুল প্রত্যাশিত কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা নিরসন–সংক্রান্ত এক সভায় যোগ দেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমির দলিল হস্তান্তর করেন। এরপর বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি বাথুয়ায় যান। পরে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরে যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

MMS
আরও পড়ুন