বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা আবারও উঠে এসেছেন আলোচনায়, তবে এ যাত্রায় ব্যাট-বলের পারফরম্যান্স নয়, তাদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ভাষা ফুটে উঠেছে ক্রিকেট প্রশাসন এবং সংগঠনগুলোর দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে।
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে অংশ নিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন পুরুষ ক্রিকেটার। বৈঠকে অংশ নিয়েছেন তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিঠুন, এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হক, শান্ত, সোহান, তাইজুল ইসলামরা। তবে বিস্ময়ের বিষয়, এসব আলোচনায় একবারও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি নারী ক্রিকেটারদের।
এই উপেক্ষা মেনে নিতে না পেরে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ নারী দলের দুই তারকা ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ ও নিগার সুলতানা জ্যোতি। যদিও জ্যোতির বক্তব্যটি ছিল অপেক্ষাকৃত পরোক্ষ, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার লেখা একটি বাক্যই পুরো পরিস্থিতির বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলে,‘ক্রিকেটার আর নারী ক্রিকেটারের ভেতর পার্থক্য আছে বন্ধু!’
রুমানা আহমেদ সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন- কেন নারীরা কোয়াবের আলোচনায় জায়গা পেলেন না? শুধু তাই নয়, তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, যখন তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে আলোচনা হয়, তখন সালমা খাতুন, রুমানা, জাহানারা আলমদের নাম উচ্চারিত হয় না কেন? তার বক্তব্যে উঠে আসে দীর্ঘদিনের হতাশা ও অবহেলার যন্ত্রণা। রুমানা লেখেন, ‘আমরাও তো এ দেশের ক্রিকেটে গৌরব বয়ে আনছি। তাহলে বৈষম্যটা কেন?’
নারী ক্রিকেটারদের এই ক্ষোভ প্রথমবারের মতো নয়। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল নারীদের জন্য একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ একটি ‘নারী বিপিএল’। বিসিবি যদিও একাধিকবার এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে, তবে প্রতিবারই সেটি আলোচনা থেকে মাঠে নামার আগেই থেমে গেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিন দলের একটি নারী বিপিএল আয়োজনের প্রস্তুতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত সূচি ও স্পনসর জটিলতায় তা বাতিল হয়।
এ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন রুমানা। উন্নত ক্রিকেট দেশগুলোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিশ্বে নারী বিগ ব্যাশ, নারী আইপিএল, নারী সিপিএল, দ্য হান্ড্রেডের মতো লিগ নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরেই শুধু আশ্বাসের বন্যা, বাস্তবায়ন নেই।
