ভাটারা থানায় আটক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার মৃত্যু

রাজধানীর ভাটারা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিষপান করে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম ফিরোজা আশরাফী। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে বিষপানের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।

এর আগে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ভাটারা থানার তিন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। বরখাস্তরা হলেন– এসআই জামাল হোসেন, কনস্টেবল শারমিন ও নাছিমা।

ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান বলেন, ফিরোজা আশরাফী নিজেকে অ্যাজমার রোগী জানিয়ে তাঁর বাসা থেকে ওষুধ আনিয়ে খাওয়ার কথা বলেন। তবে কৌশলে ওষুধের বদলে বিষ আনিয়ে খেয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় তাঁকে সহায়তার দায়ে শোভা ও কণা নামে তৃতীয় লিঙ্গের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ফিরোজা আশরাফী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এবং তাঁর স্বামী ইসমাইল কামাল রিফাত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। দু’জনের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এ কারণে তারা পল্লবী ও বসুন্ধরায় আলাদা বাসায় থাকতেন। কলহের জেরে বুধবার গভীর রাতে পল্লবীর বাসায় গিয়ে স্বামী ইসমাইলের গোপনাঙ্গ কেটে দেন ফিরোজা। পরে নিজেই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে ইসমাইলের স্বজনরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। একই সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান ফিরোজা। পরে পল্লবী থানা পুলিশ ফিরোজাকে গ্রেপ্তারের জন্য ভাটারা থানা পুলিশকে অনুরোধ জানায়। এর ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফিরোজাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তবে তিনি ৯৯৯-এ কল করায় তাঁকে নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়। সেখানে নিরাপত্তায় দু’জন নারী পুলিশ সদস্যও ছিলেন। থানায় থাকা অবস্থায় ফিরোজা কৌশলে ফোন দিয়ে আইনি সহায়তার জন্য একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই ব্যক্তি তৃতীয় লিঙ্গের শোভাকে ভাটারা থানায় পাঠান। শোভা থানায় গেলে ফিরোজা তাঁর বসুন্ধরার বাসা থেকে অ্যাজমার ওষুধ এনে দিতে বলেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৮টার দিকে শোভা ওষুধ এনে দেন। সেটি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফিরোজা। পরে জানা যায়, বাসা থেকে বিষ এনে খেয়েছেন তিনি।