হাতিয়ায় বাবার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হান্নান মাসুদ

নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) সংসদীয় আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবা আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হান্নান মাসুদ। নির্বাচনী লড়াইয়ে ব্যতিক্রমী এই প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় আলোচনা ও কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।  

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়ন দাখিলের শেষে দেখা যায়, বাবা আবদুল মালেক বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) হয়ে একতারা প্রতীকে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ছেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ শাপলা কলি প্রতীকে ইতোমধ্যে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন।

গতকাল বাবার ভিন্ন দলের প্রতীকে মনোনয়ন দাখিল করায় এলাকায় চলছে আলোচনা, সমালোচনা ও কৌতূহল।

এদিকে বাবা ছেলের নির্বাচনী মাঠে নামাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। কেউ দেখছেন রাজনৈতিক একটা ভিন্ন কৌশল। এই ধরণের প্রার্থীতা ভোটের মাঠে প্রভাবিত করতে পারে। এতে প্রকৃত রাজনৈতিক চর্চা ও উন্নয়ন ইস্যুর বদলে গোষ্ঠী শক্তির আবির্ভাব হতে পারে। যা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক উন্নয়ন অগ্রগতি তথা নির্বাচনী দৃষ্টিভঙ্গীর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

জানা গেছে, নোয়াখালী–৬ (হাতিয়া) আসনে এবারের নির্বাচনে মোট ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী থেকে অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে আবদুল হান্নান মাসউদ, বিএনপি থেকে মো: মাহবুবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন মোহাম্মদ ফজলুল আজিম, শামীমা আজিম, তানভীর উদ্দিন রাজিব, মুহাম্মদ নুরুল আমীন।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে এ টি এম নবী উল্যাহ, নাছিম উদ্দিন মো: বায়েজীদ। অন্যান্য দলের মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব, গণ অধিকার পরিষদের মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম শরীফ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক।

স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও ভোটারদের মতে, একই পরিবার থেকে একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীর অংশগ্রহণ কেবল রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি পেশিশক্তির দাপট দেখানোর একটি মাধ্যম। এতে করে সংশ্লিষ্ট পরিবার বা গোষ্ঠী এলাকাজুড়ে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিতে চায় এবং প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার অপকৌশল বলে মনে করছেন।

হাতিয়ার রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিদের অনেকেই বলেন, একই পরিবার থেকে দুই বা ততোধিক প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ হাতিয়ার রাজনীতিতে নতুন কোনো বিষয় নয়। মূলত একটি সুপরিকল্পিত কৌশল, যার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক প্রভাব বজায় রাখা যায়। একাধিক প্রার্থী থাকলে একদিকে যেমন বেশি এজেন্ট নিয়োগ করা সম্ভব হয়, তেমনি মাঠে লোকবল ও শক্তির উপস্থিতিও বাড়ে, যা নির্বাচনের দিন বড় ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছি। তবে ভোটের অভিজ্ঞতা আমার জন্য একেবারেই নতুন। ভোটার হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। নোয়াখালী–৬ আসনের বাকি ১৩ জনের মধ্যে আমার বাবা একজন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ মানুষ। তাই তার মনোনয়ন পত্র দাখিল করাকে আমি উৎসাহিত করেছি। তবে এ বিষয়ে আব্দুল মালেকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।