বানিয়াচং (হবিগঞ্জ): হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত স্কুলছাত্র শোয়েব মিয়া (১০) এখন প্রায় শয্যাশায়ী। বর্তমানে চিকিৎসার অভাবে অচল হয়ে পড়েছে তার দুটি পা। চিকিৎসার টাকার জন্য বিপাকে পড়েছে তার দরিদ্র পিতা-মাতা।
স্কুলছাত্র শোয়েব ১ নম্বর ইউনিয়নের সংগ্রাম রায়ের পাড়ার রোশন মিয়ার পুত্র। সে স্থানীয় মীর মহল্লা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
আহত স্কুলছাত্র শোয়েবের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ অক্টোবর বেলা ১১টায় উপজেলার আদর্শ বাজারের উত্তরের পাকা সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলো শোয়েব। এসময় পেছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি মোটরসাইকেল তাকে ধাক্কা দিলে সে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষনিক স্থানীয় লোকজন এবং তার দাদা তাকে উদ্ধার করে বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেটে প্রেরণ করেন। দু’দিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ্য হলে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
এ ঘটনায় শোয়েবের দাদা মোতাব্বির মিয়া বানিয়াচং থানায় বাদী হয়ে ২ নম্বর ইউনিয়নের সৈদরটুলা গ্রামের হাশর আলীর পুত্র মোটরসাইকেল চালক জাবেদ মিয়ার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্ত জাবেদ মিয়া আহত শোয়েবের চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করে বাদীপক্ষকে অভিযোগ প্রত্যাহার করান। তিনি দু’বারে চিকিৎসা বাবদ ১০ হাজার টাকাও দেন। এর ১০-১৫ দিন পর আবারো অসুস্থ হয়ে পড়ে শোয়েব। এবার চিকিৎসার টাকা দিতে নারাজ জাবেদ মিয়া। তিনি আর টাকা দিবেন না বলে শিশুটির পরিবারকে জানিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে ন্যায় বিচারের জন্য এলাকার পঞ্চায়েত ও মুরুব্বিদের কাছে গিয়েও পরিবারটির কোনো কাজ হয়নি।
শোয়েবের দাদা মোতাব্বির মিয়া জানান, জমি বন্ধক রেখে আড়াই মাস ধরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পরই এমন অবস্থা তার। বর্তমানে তার দুটি পা অচল হয়ে গেছে, চলাচল করতে পারে না। জাবেদ মিয়া চিকিৎসা করানোর অঙ্গীকার দিয়েও কথা রাখেননি। নাতিকে সুস্থ করে তুলতে দেশের বিত্তশালীদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।