পিতার মৃত্যুর পর মায়ের প্রচেষ্টায় বগুড়ার ধুনট গ্রামের তিন যমজ ভাই এখন সরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্র। তারা হলেন- মো. মাফিউল হাসান, মো. সাফিউল হাসান, মো. রাফিউল হাসান।
জমজ এই তিন ভাই ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ী গ্রামের স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফার ছেলে। মা আর্জিনা বেগমসহ বর্তমানে তাদের ৬ সদস্যের পরিবার। তিন জমজ ভাইয়ের মাঝে মাফিউল গত বছর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ চান্স পেয়ে ভর্তি হয়েছেন। এবছর সাফিউল দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ ও রাফিউল নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন।
ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তফিজ উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তিন ভাই এক সাথে স্কুলে শিক্ষকদের কাছে দোয়া নিতে এসেছিল। তারা মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় শিক্ষকরা খুশি। এটা স্কুলের জন্য গৌরবের বিষয়।
তাদের মা আর্জিনা বেগম জানান, ওদের বাবা গোলাম মোস্তফা হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। তখন ওদের বয়স ৫ বছর। বাবা মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানকে পড়ালেখা করানো নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। নিজে কষ্ট করে জমি বিক্রি করে সন্তানদের পড়ালেখা করিয়েছেন। প্রায় ৫ বিঘা জমি ছিল। অবশিষ্ট যা আছে, তাও বিক্রি করে ওদের চিকিৎসক বানাবেন, যাতে তাদের মত গরীব মানুষদের সেবা করতে পারে।
মাফিউল হাসান জানান, আমরা তিন ভাই বগুড়ায় এক সাথে মেসে থেকে সরকারি শাহ সুলতান কলেজে পড়েছি। মা কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে পড়ালেখা খরচ যোগান দিয়েছেন। কখনোই আমাদের কষ্ট দেননি। গ্রামের মধ্যে আমরাই প্রথম মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। এজন্য গ্রামের মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। শাফিউল হাসান জানান, আজ বাবা থাকলে কত খুশি হতেন। বাবাকে হারিয়েছি শিশুকালে। মা-ই বাবার অভাব পূরণ করছেন। মানুষের সেবা করার জন্য চিকিৎসক হতে পারি, এই দোয়া চাই সবার কাছে। রাফিউল হাসান জানান, অসুস্থ অবস্থায় বাবা মারা যান। যখন বুঝতে পারলাম বাবার সেই কথা তখন থেকেই তিন ভাই প্রতিজ্ঞা করি ডাক্তারি পড়বো।