নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের মো: শিপন মিয়া (২৬) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি করিমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। গত ২০ নভেম্বর এফিডেভিট করে তিনি দল ছাড়ার আইনি ঘোষণা দেন।
রড-সিমেন্ট-বালু ব্যবসায়ী শিপন মিয়া করিমগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম নয়াকান্দি গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। আওয়ামী লীগ ছাড়ার এফিডেভিটে তিনি লিখেন, ‘আমি করিমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ছিলাম। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি আওয়ামী লীগের বিগত কার্যক্রমে কখনোই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করিনি এবং বর্তমানেও আওয়ামী লীগের কোনো কার্যক্রমের সহিত আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। বর্তমানে ও বিগত আওয়ামী লীগের নানা অপরাধমূলক ও অন্যায় কাজ দৃশ্যমান হওয়ায় আমি স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে আমার পদ-পদবী হইতে অর্থাৎ করিমগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করিলাম। অদ্য হইতে আওয়ামী লীগের সহিত আমার কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নাই।’
শিপন মিয়ার এফিডেভিটভিত্তিক দলত্যাগ স্থানীয় রাজনীতিতেও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বর্তমানে তার এফিডেভিটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের মধ্যে অবস্থান বদলের ঝোঁক দেখা যাচ্ছে। এসব পদত্যাগের ঘটনাকে অনেকেই রাজনৈতিক বাস্তবতার নতুন চিত্র হিসেবে দেখছেন।
এ বিষয়ে রোববার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শিপন মিয়া আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ব্যক্তিগত, সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে নিরপেক্ষভাবে চলার উদ্দেশ্যেই তিনি রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক ও দায়–দায়িত্ব তৈরি হয়, যা তিনি আর বহন করতে চান না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি আর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে চাই না। কারণ আমার পেশা ব্যবসা। আমি আওয়ামী লীগ আমলেই দল ছাড়তে চেয়েছিলাম, কিন্তু সুযোগ হয়নি। এখন যেহেতু একটি অনুকূল পরিবেশ আছে, সুযোগটি কাজে লাগিয়ে পদত্যাগ করেছি।’
বিষয়টি নিয়ে করিমগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আশরাফ হোসেন পাভেল বলেন, ‘আমার হাতেও আওয়ামী লীগ নেতা শিপন মিয়ার এফিডেভিটের একটি কপি এসেছে। এর আগে ফেসবুকেও বিষয়টি দেখেছি। এখন কত নেতা কতভাবে আওয়ামী লীগ ছাড়বে! তবে এই বিষয়টা খুব মজার ছিল।’