বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকের ভিড়

বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় দেশ-বিদেশ থেকে আসা পর্যটকের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে সৈকতে। সবাইকে সতর্ক করছে টুরিস্ট পুলিশ। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে করা হচ্ছে মাইকিং।

বৃষ্টি, সাগরের বড় ঢেউ, প্রচন্ড বাতাস- সবকিছু উপেক্ষা করে পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন কুয়াকাটা সৈকতে। বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করে পানিতে নেমে হইচই করছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবার-পরিজন, প্রিয়-প্রেয়সী, বন্ধুবান্ধব একত্র হয়ে পাহাড় সমান ঢেউের সাথে আনন্দ মেতে উঠতে দেখা গিয়েছে। মূলত সমুদ্র সৈকত বছরের জৈষ্ঠ, আষাঢ় ও ভাদ্র মাসে প্রচন্ড উত্তল থাকে। এতে যেমন ভয়ঙ্কর রূপে থাকে সমুদ্র সৈকত, তেমনি বড় বড় ঢেউ মুগ্ধও করবে।

এদিকে পর্যটকের এমন উপস্থিতিতে হাসি ফুটেছে পর্যটক ব্যবসায়ীদের মুখে।

খুলনা থেকে আসা পর্যটক শরিফুল ইসলাম বলেন, সাগরের ঢেউ বড় হয়েছে, তাতে সমস্যা নেই। আমরা এখানে বন্ধুরা মিলে আনন্দ করতে এসেছি, তাই আনন্দ করেই যাব। আসছি সাগরে গোসল করতে। সেই সাগরে যদি ঢেউই না থাকে, তাহলে কেমন হয়? আমরা মজায় আছি, কারণ অনেক ঢেউ এখন সমুদ্রে। 

ঢাকা থেকে আসা সানজিদা রেশা বলেন, ৫ বছর পর কুয়াকাটা এলাম আমি আর আমার হাজবেন্ড। কুয়াকাটায় মেঘলাচ্ছন্ন আকাশ আর বৃষ্টি, সাগর উত্তাল। এরপরও সাগরে নেমে গোসল করেছি। প্রচন্ড বাতাস, উত্তল সমুদ্রের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করাটা অন্যরকম অনুভূতি। 

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লায়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজী জানিয়েছেন, সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পর্যটকদের চাপ রয়েছে। ৭০-৮০ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। কিছু কিছু হোটেল ও রিসোর্টে শতভাগ বুকিং হয়েছে। এই সময়টায় মূলত সমুদ্রের ভয়াবহ রূপ দেখতে অনেক পর্যটক এসে থাকেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সমুদ্র পাড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাঈনুল জানান, অনেক বাতাস আর বৃষ্টি- সব মিলে অনেক উত্তল রয়েছে সাগর। বড় বড় ঢেউয়ের সাথে লাফালাফি করছে পর্যটকরা। আল্লাহর রহমতে আমাদের বিক্রিও ভালো হচ্ছে।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানালেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এক এক সময় নতুন নতুন রূপ ধারণ করে। কখনো নীরবতা, কখনো ভয়ঙ্কর। বর্তমানে ভয়ংকর রূপ বলতে পাহাড় সমান ঢেউ ভেঙে পড়ছে কিনারায়, ঢেউয়ের সাথে আনন্দ মেতে উঠছে পর্যটকরা।

টুরিস্ট পুলিশ জোন কুয়াকাটার এসপি হাবির বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সতর্ক করছে এবং বিভিন্ন স্পটগুলোতে কঠোর নজরদারি রাখছে। সমুদ্রে গোসল করতে নেমে যাতে কোন পর্যটকের সমস্যা না হয়, সেজন্য স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরি রয়েছে।