পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক রাতে ৩ বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) মধ্যরাত আনুমানিক ৩টার দিকে উপজেলার মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে এসব ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মহিপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আতিকুর রহমান মিলনের বাড়িসহ একই এলাকার আবুল হোসেন ও মহিউদ্দিনের বাড়িতে ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল হামলা চালায়। এ সময় তারা পরিবারের সদস্যদের বেঁধে ফেলে মূল্যবান মালামাল স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, ডাকাতচক্রটি প্রথমে আতিকুর রহমান মিলনের বাড়িতে হানা দিয়ে ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৬ লাখ টাকা ও অন্যান্য মালামালসহ প্রায় ২২ লাখ টাকার সম্পদ লুট করে। এ সময় মিলন স্বপরিবারে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। ফলে বাসাটি ফাঁকা থাকায় ডাকাত সদস্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ভুক্তভোগী আতিকুর রহমান মিলন লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক দলের মহিপুর থানা শাখার সদস্য সচিব।
একই রাতে পূর্ব আলীপুর গ্রামের আবুল হোসেন খানের বাসায় জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে ডাকাতরা। এ সময় স্বামী-স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ৬ আনা স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
অপরদিকে মহিউদ্দিনের বাসায় সিঁধ কেটে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের বেঁধে রেখে ৮ আনা স্বর্ণালংকার ও নগদ ২৫০০ টাকা লুট করে। তবে এসব ঘটনায় কাউকে শারীরিকভাবে ক্ষতি করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা বশির উদ্দিন বলেন, সকাল ৬টার দিকে ফজরের নামাজ শেষে মিলন ভাইয়ের বাসায় এসে দেখি গেট খোলা ও দরজার লক ভাঙা, সাথে সাথে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করি। তার উপস্থিতিতে বাসায় ঢুকে দেখি সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। বাড়ির মালিক চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছে।
বাবু নামের একজন জানান, রাত আড়াই টার দিকেও বাজারে নাইটগার্ড নিয়ে বাড়িটি ঘুরে দেখে আসি, তখনও সবকিছু ঠিকঠাক ছিলো।
ডাকাতির শিকার আতিকুর রহমান মিলন বলেন, আমরা স্ব-পরিবারে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থানকালে শনিবার মধ্যরাতের যেকোনো একসময় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আমার বাসা থেকে নগদ ৬ লাখ টাকা ৭ ভরি স্বর্ণালংকারসহ আনুমানিক ২২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
অন্য ভুক্তভোগী সোবাহান জানান, আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাদের মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৬ হাজার টাকা ও ৬ আনি ওজনের কানের ঝুমকা নিয়ে যায়। ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দিয়ে চলে যান।
অপর ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ঘরে সিঁধ কেটে ৭/৮ জনের একটি ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে ঘরে থাকা নগদ ২ হাজার ৫'শ টাকা ও ৮ আনি ওজন একজোড়া কানের দুল নিয়ে যায়।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তথ্য সংগ্রহ করেছে। দোষীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে টানা ৩টি বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।