সমুদ্রগর্ভে বিলীন কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান, সৈকতে ভাঙ্গন রোধের দাবি

বর্ষার ঢেউ আর ক্রমাগত ভাঙনে পটুয়াখালী কুয়াকাটা সৈকতের জাতীয় উদ্যান আজ বিলীন হওয়ার পথে। এক সময়ের অপরূপ সবুজ বেষ্টনী ও পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্থানটির প্রায় ৮০ শতাংশই ইতোমধ্যে সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে গেছে। বাকি অংশটুকুও ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

২০১০ সালে প্রায় ৪ হাজার একর জমি নিয়ে গড়ে ওঠা এই উদ্যানকে কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ঝাউবন আর নারিকেল বাগানের সবুজ ছায়াঘেরা সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের মন কেড়ে নিত। কিন্তু এখন সেখানে কেবল সাদা বালুরচর চোখে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরে প্রথম বড় ক্ষতির শিকার হয় উদ্যানটি। পরবর্তীতে প্রায় প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের আঘাতে হারিয়ে গেছে বিপুল এলাকা। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে বাকিটুকুও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

জাতীয় উদ্যানের পাশে বসবাসকারী আনসার মাঝি বলেন, এক সময় এখানে ঝাউ, নারিকেল, আম, সালতিসহ নানা জাতের গাছ ছিল। প্রতিদিন ভ্রমণকারীদের আনাগোনায় মুখর থাকতো এলাকা। কিন্তু এখন সাগরের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে সুন্দর এই উদ্যান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুদিন ধরে সামাজিক সংগঠন ও এলাকাবাসী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানালেও বন বিভাগ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে শুধু জাতীয় উদ্যানই নয়, ফসলি জমি ও বসতবাড়িও ভাঙনের কবলে পড়ে ধ্বংস হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বছরের ৫ মাস (বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠসহ) প্রবল ঢেউ ও স্রোতের কারণে ভাঙন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এরই মধ্যে হারিয়ে গেছে উদ্যানের ঐতিহ্যবাহী নারিকেল বাগানও।

সামাজিক সংগঠনগুলো বলছে, দ্রুত কার্যকর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে কুয়াকাটার জাতীয় উদ্যান।