বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের তিতারপাড়া থেকে ইলিয়াসের দোকান পর্যন্ত সড়কটির বেহাল দশা এলাকাবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয়দের এক সময়ের প্রাণের সড়ক হিসেবে পরিচিত এ পথ আজ কাদাপানিতে ডুবে অচল হয়ে পড়েছে। বর্ষায় রাস্তাজুড়ে জমে থাকা পানি ও গভীর গর্ত তৈরি হওয়ায় এখন গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ, এমনকি পথচারীরাও নিরাপদে হাঁটাচলা করতে পারছেন না।
প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করলেও বছরের পর বছর সংস্কারের অভাবে সড়কটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে না পারায় তাদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
অভিভাবকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে শিশুদের শিক্ষার মান ও ভবিষ্যৎ দুটোই ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
কৃষক ও ব্যবসায়ীরাও চরম ভোগান্তিতে আছেন। মাঠের ফসল, বাজারের পণ্য কিংবা রোগীবাহী যানবাহন কিছুই আর স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারছে না। এ অবস্থায় জরুরি সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আবদুস শুক্কুর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ রাস্তায় বহু বছর ধরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্ষা এলেই রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়, কাদা ও গর্তে পরিণত হয়। আমরা বারবার অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হয় না। এভাবে আর কত দিন চলবে?
স্থানীয় বাসিন্দা ওলা মিয়া নুরুল হক, মো. পেঠান, হাজী ইসালাম, মো. কালু, নুরুল আমিনসহ আরও অনেকে জানান, দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে জনজীবন পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়বে। এ সড়ক সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো সড়কজুড়ে জমে থাকা পানি, গভীর খোঁড়াখুঁড়ি আর কাদা—এ যেন দুর্ভোগের এক ভয়াবহ চিত্র। শিশু-কিশোররা খেলতে গিয়ে বারবার পড়ে যাচ্ছে, অনেকে আহতও হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানি বলেন, তিতারপাড়া থেকে ইলিয়াসের দোকান পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বারবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ইউনিয়নের সীমিত বাজেটে এত বড় কাজ করা সম্ভব নয়। এই রাস্তা শুধু বাইশারীর নয়, পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের মানুষও ব্যবহার করেন।
তাই এ সড়ক সংস্কার করা এখন সময়ের দাবি। আমি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এবং জনপ্রতিনিধিদের প্রতি জোর দাবি জানাই, যেন দ্রুত এ রাস্তার সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও কিছু ভাঙা জায়গা মেরামতের চেষ্টা করেছি। কিন্তু পুরো সড়ক মেরামত করার জন্য সরকারিভাবে বড় প্রকল্প গ্রহণ জরুরি। আশা করি, স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি দ্রুত নজরে এনে এলাকাবাসীর দুঃখ-কষ্ট লাঘব করবে।
এলাকাবাসীর একটাই দাবি, দ্রুত এ রাস্তার সংস্কার করে তাদের স্বাভাবিক যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত করা।