গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিক শরীফ আহম্মেদকে (৩৫) আটকের পর তার বাড়ি থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টায় নান্দিয়াসাঙ্গুন এলাকার থেকে তাকে আটক করা হয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেরাজুল ইসলাম থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
শরীফ আহম্মেদ শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়াসাঙ্গুন গ্রামের মাইজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার স্কয়ার মাষ্টারবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। শরীফ জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি) শ্রীপুর উপজেলা শাখার সদস্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা শাখা নাগরিক কমিটির ১নং সদস্য মামুন হাসান।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে উপজেলার নান্দিয়াসাগুন গ্রামে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে বাড়িতে পিস্তল নিয়ে অবস্থান করছে অস্ত্রধারী শরীফ আহম্মেদ। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে শরীফ আহম্মেদকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী অজ্ঞাত আসামি পালিয়ে যায়। পরে আসামির দেখানো মতে তার বাড়ির উত্তর পাশের কক্ষ থেকে একটি বিদেমি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেরাজুল ইসলাম বলেন, শরীফ আহম্মেদ পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই মামলার আসামি।
শরীফ আহম্মেদের বাবা মাইজ উদ্দিন (৬৫) এবং মা নুর নাহার শ্রীপুর থানা প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আটকের দিন শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শরীফের বন্ধু পাশের বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের সোহেল মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাড়িতে উপস্থিত হয়। এ সময় শরিফের বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না এবং শরিফ ঘরে খাটে শুয়ে ছিল।
বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে সোহেল শরিফের ঘরে শোকেসের ড্রয়ারে পিস্তল রেখে দিয়ে শরিফ নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ে। পরে বরকুল (এনামুল মোল্লার) বাড়ির কাছে আসলে স্থানীয় লোকজন শরিফকে আটক করে মারধর করে।
এ সময় সোহেলসহ স্থানীয়রা বলতে থাকে তোর কাছে পিস্তল আছে। শরিফ বলে আমার কাছে কোনো পিস্তল নাই। মারধর করার সময় তারা বারবার বলতে থাকে তোর ঘরের ড্রয়ারে পিস্তল আছে। পরে শরিফ বরকুল (এনামুল মোল্লার) বাড়ির কাছে আহত অবস্থায় পড়ে থাকলে তার বন্ধু সোহেলসহ স্থানীয় লোকজন শরিফের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরের ড্রয়ার থেকে পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ বাড়িতে যায়। কিছুক্ষণ পর আহত অবস্থায় পড়ে থাকা শরিফকে সাথে নিয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে পিস্তল জব্দ করে তাকেসহ থানায় নিয়ে আসে।
শরীফ আহম্মেদের মা নুর নাহার বলেন, সন্ধ্যায় আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে সোহেল ঘরে প্রবেশ করে ড্রয়ারে পিস্তল রেখে তাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়। যদি সোহেল আমার ছেলের ঘরে ড্রয়ারে পিস্তল না রাখে, তাহলে সে খবর সোহেলসহ স্থানীয় লোকজন কীভাবে জানল এবং তাকে আটক করে কেন মরধর করলো? আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্যই কৌশলে সোহলে এ কাজ করেছে।
শ্রীপুর উপজেলা শাখা নাগরিক কমিটির ১নং সদস্য মামুন হাসান বলেন, আটক শরীফ আহম্মেদ পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই মামলার আসামি না। আসামি ছিনতাই মামলার এজাহারভুক্ত ২নং আসামি শরিফ মিয়া (৩৩) বরমী ইউনিয়নের বরকুল গ্রামের শামসুল হুদার ছেলে।