দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষে পরিবারের কাছে ফিরছেন জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেল চারটায় চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছেন তারা। এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কুতুবদিয়া থেকে ২৩ নাবিককে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় এমভি জাহান মণি-৩ নামের একটি লাইটারে জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পর নাবিকদের বরণ করে নেন স্বজনরা। এ ছাড়া নাবিকদের সংবর্ধনা দেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর আনুষ্ঠানিকতা শেষে নাবিকরা স্বজনদের সঙ্গে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
এর আগে নাবিকদের অপেক্ষায় ছিলেন স্বজনরা। তাদেরই একজন জোছনা বেগম। তিনি এমভি আবদুল্লাহর নাবিক তানভীর আহম্মেদের মা। দুইমাস পর ছেলেকে দেখবেন তিনি। তাই দুপুরের দিকে চলে এসেছেন চট্টগ্রাম বন্দরে। রান্নাও করেছেন ছেলের পছন্দের খাবার। যেমন- শিম, শুঁটকি ও গরুর মাংস।
মো. তানভীর আহমেদ এমভি আব্দুল্লাহর ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার। বাসা চট্টগ্রামের সিডিএ ১০ নম্বর এলাকায়। জোছনা বেগম বলেন, ছেলেকে দেখবো এরচেয়ে খুশির খবর আর কী আছে। ছেলেকে দেখবো বলে, সকাল থেকে রেডি হয়ে আছি। বিকেল চারটায় পৌঁছাবে তাই আর তর সইছে না। সেজন্য দুপুরেই বন্দরে চলে এসেছি। তিনি বলেন, ছেলে তানভীর যেসব খাবার পছন্দ করেন, সবই রান্না করেছি। যেমন- শিম, শুঁটকি ও গরুর মাংস রান্না করেছি।
এদিকে নাবিকদের পরিবারেও শুরু হয়েছে স্বজনদের ঘরে ফেরার উৎসব। নানা আয়োজনে নাবিকদের বরণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন সবাই অধীর আগ্রহে তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হয়েছে।
মৃত্যুর দুয়ার থেকে সন্তান ফিরছেন এই আনন্দে মাতোয়ারা শিমুলের মা শাকেরা বেগম। স্বামীহারা এই নারী অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন ছেলেকে বুকে নেওয়ার জন্য। স্ত্রী ফারজানা আকতার স্বামীর জন্য রেঁধেছেন পছন্দের সব খাবার। তাদের মতোই নিজ দেশের সন্তানদের ফিরে পেয়ে আনন্দিত সারা দেশের মানুষ।
শামসুদ্দিন শিমুলের স্ত্রী ফারজানা সুলতানা বলেন, তার বাড়ি ফেরার কথা শুনে সকলে খুবই আনন্দিত। ঈদের আনন্দ এখন বাড়িতে। সাগরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি দশার দীর্ঘদিনের কঠিন মুহূর্তের পর তিনি আমাদের মাঝে ফিরবেন এটা ভাবতেও খুব আনন্দ অনুভব হচ্ছে।