কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভাঙ্গন অব্যাহত, শঙ্কিত মানুষ 

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। এতে শঙ্কিত কক্সবাজারবাসী। নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের স্রোতে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গনের পাশাপাশি উপড়ে পড়ছে ঝাউবাগান। 

এদিকে উপড়ে পড়া ঝাউগাছ আর সাগর পাড়ের ভাঙ্গনের ভয়াবহতায় শঙ্কিত স্থানীয় মানুষ।

ইতোমধ্যে উত্তাল সাগরের স্রোতে গত কয়েক বছরে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার লোকালয়ের কাছে চলে এসেছে সমুদ্র। সৈকতের এমন ভয়াবহ রূপ আগে কেউ দেখেনি বলে এমনটাই বলছে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষ।

সরেজমিনে কবিতা চত্ত্বর, ডায়াবেটিস পয়েন্ট, শৈবাল পয়েন্ট ও লাবনী পয়েন্টসহ সমুদ্র পাড়ের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, জিও ব্যাগ ও কংক্রিটের সৃষ্ট বাঁধ দিয়েও মানছে না এই ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বহু পুরাতন স্থাপনা। 

দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্র তীরে কাজ করা কিটকট ছাতা ব্যবসায়ের সাথে জড়িত নুরুল আলম বলেন, ৫ থেকে ৬ বছর ধরে বীচে কাজ করছি। শৈবাল ক্যাফের স্থাপনা আর কংক্রিটের রাস্তা ভেঙে গেছে। জানি না সামনে এ ভাঙ্গন কত দূর যায়। কোন ব্যবস্থা না নিলে এ ভাঙ্গন হয়তো আরো এগিয়ে যাবে।

সৈকতে ঘুরতে আসা কক্সবাজারের বাসিন্দা আবু জাফর বলেন, সৈকত যেভাবে ভাঙ্গছে দেখে মনে হচ্ছে বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দিয়েছিল। ফলশ্রুতিতে ধ্বংসস্তুপের মতোই দেখাচ্ছে এ সৈকত। অথচ বড় ধরনের দুর্যোগ নয়, প্রতিদিনই আস্তে আস্তে ভেঙ্গে এ বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছে এ সৈকত।

বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপু বলেন, প্রতি বছর সৈকত পাড় ভাঙ্গে। কিন্তু বর্তমানে ভাঙ্গন বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছে। এ ক্ষতি মেটাতে প্রকৃতিকে প্রকৃতি দিয়েই রক্ষা করতে হবে। শেকড় যুক্ত গাছ সৈকতের বালিয়াড়িতে রোপন করলে গাছের শেখর মাটি আকড়ে ধরে রাখে। ফলে ভাঙ্গন অনেকাংশে কমে আসবে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, সমুদ্রে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ভাঙ্গনের কারণ হল সাগর তীর থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও জলবায়ু পরিবর্তন। এ বীচকে কেন্দ্র করেই কিন্তু কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা পরিচালিত হয়। সমুদ্র ভাঙ্গন রোধে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে পর্যটন ব্যবসায় বড় ধরনের ধ্বংস নামবে বলে আমি মনে করি। 

এ পর্যন্ত সৈকতে কত পরিমাণ ঝাউগাছ নষ্ট হয়েছে এবং নতুন করে ঝাউ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: নুরুল ইসলাম জানান, রেঞ্জ অফিসারদের কাছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে চেয়ে রির্পোট জমা দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করবে বনকক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। এতে শঙ্কিত কক্সবাজারবাসী। নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলে সাগরের বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। ঢেউয়ের স্রোতে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গনের পাশাপাশি উপড়ে পড়ছে ঝাউবাগান। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নুরুল ইসলাম বলেন, দ্রুত একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করবো। তারা যদি মনে করে কাজটি যুক্তি সংগত তাহলে এবং জরুরিঘোষণা করলেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

এদিকে ভাঙ্গন প্রতিহত করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে খুব শীঘ্রই কক্সবাজারের লোকালয় সমুদ্র গিলে খাবে- এমনটাই আশঙ্কা করছেন সচেতন স্থানীয় বাসিন্দরা।