ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ২০ কিলোমিটার তীব্র যানজট

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে একটি পণ্যবাহী ট্রাক বিকল হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোর ৪টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার বেড়তলা থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড় মোড় হয়ে শাহবাজপুর এলাকায় প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা।

পুলিশ ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট থেকে ঢাকাগামী একটি বালুবাহী ট্রাক মহাসড়কের বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বর এলাকায় বিকল হয়ে যায়। এতে মহাসড়কটির ওই অংশের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল করতে থাকে। সড়কজুড়ে খানাখন্দের কারণে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। একপর্যায়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। আজ ভোর ৫টার দিকে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্রাকটির পাশে মাটি দিয়ে যান চলাচলের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সেখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ৪/৫টি যানবাহন আবার আটকে যায়। পরে পুলিশ সেগুলো রেকার দিয়ে উদ্ধার করে।

এ অবস্থায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনের বিশৃঙ্খলা চলতে থাকে। চালকেরা কার আগে কে যাবেন, এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সকাল ৮টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা করেন।

পুলিশ প্রথমে বিকল ট্রাকটি থেকে কিছু বালু অপসারণ করে। একপর্যায়ে সকাল সোয়া ৯টার দিকে রেকার দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকটি সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় তারা। ততক্ষণে সরাইল উপজেলার বেড়তলা থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে শাহবাজপুর পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট লেগে যায়। পরে যান চলাচল শুরু হলেও ধীরগতির কারণে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এর কারণ হিসেবে বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশের সড়কে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তকে দায়ী করেছেন চালকরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে কাদাপানি জমে আছে। এতে গোলচত্বরের তিন–চতুর্থাংশ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দূরপাল্লার যানবাহন মহাসড়কের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে থেমে যাচ্ছে। এসব গর্ত অতিক্রম করতে গিয়ে পণ্যবাহী যানবাহনগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চলতে হচ্ছে মাত্র ১-৫ কিলোমিটার গতিতে।

এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়ক পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। এসব পথে চলাচলকারী কয়েকশ নারী-পুরুষকে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে।

সিলেট থেকে ঢাকাগামী বাসের চালক মনির হোসেন জানান, ভোর থেকে আটকে আছেন। সামনের দিকে যেতে আরও অনেক সময় লাগবে।

বাসযাত্রী গাজী মিয়া বলেন, সিলেট থেকে সরাইল বিশ্বরোড চলে আসছি ৩ ঘন্টায়। আর এখন জ্যামে আটকে আছি ৩ ঘন্টা ধরে। ঢাকা কখন গিয়ে পৌছাবো জানি না।

দুপুর ১টায় সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের গর্ত ভরাটের পাশাপাশি সড়কের পাশের অংশ সমান করে পথচারী ও যানবাহনের চলাচলের উপযুক্ত করতে পারলে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে। গোলচত্বরের গর্তে বারবার যানবাহন আটকে যায়। তবুও আমরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।