শখের বশে ছাগল পালন করে লাখপতি মেরাজ

প্রথমে শখের বশে একটি ছাগল পালন শুরু করেন। পরে গড়ে তোলেন খামার। ছাগলের সংখ্যা এখন অর্ধশতাধিক। কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকটি ছাগল বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলোও বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
 
বলছিলাম তরুণ উদ্যোক্তা  সাইফুল ইসলাম মেরাজ কথা। তিনি আহসানউল্লাহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল) পাস করেছেন।
 
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ২ নং আকুবপুর ইউনিয়নের পীর কাশিমপুর গ্রামের আল্লাহ ভরসা এগ্রো ফার্মের মালিক হাবিবুর রহমান  মানিক ছেলে সাইফুল ইসলাম মেরাজ। ১২ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল কিনে লালন-পালন শুরু করেন। সেই মেরাজ এখন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মালিক। ধীরে ধীরে বড় করে তুলছেন তার এই খামার।
 
 
মিরাজ বলেন, আমার ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান মোয়াজকে সাথে নিয়ে অর্ধশতাধিক ছাগল বড় করেছিলাম। বেশ কিছু ছাগল বিক্রি করেও ৪৫টি ছাগল রয়ে গেছে। বর্তমানে আমার এখানে একটি ছাগল রয়েছে, যার দাম ধরা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। আরেকটি ছাগলের ২ লাখ টাকা দাম ধরেছি। বাকিগুলো ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছি।
 
ছাগল লালন-পালনে সম্ভাবনার কথা জানিয়ে মেরাজ আরও বলেন, গরুর মতো ছাগলের খাবারে তেমন খরচ হয় না। যে কারণে ছাগল লালন-পালন করে লাভজনক হওয়া যায়। গম, ভুট্টা, ছোলা, খেসারি, মাসকলাই ও ঘাস খাইয়েই ছাগল লালন-পালন করা যায়। আমি মনে করি চাকরির পেছনে ছোটাছুটি না করে এভাবে নিজেরাই উদ্যোক্তা হওয়া যায়। নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ে তোলা যায়।
 
মেরাজের মা নুরুন নাহার বেগম বলেন, প্রথমে আমিই ছাগল কিনে এনেছিলাম। পরে আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ২ ছেলে মেরাজ ও মোয়সজকে ছাগল লালন-পালন শুরু করে। সেই সঙ্গে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। এখন সে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ে তুলেছে। তার আগ্রহ দেখে আমি তাকে সহযোগিতা করি। 
 
 
ছাগল লালন-পালনের বিষয়ে মেরাজের বাবা হাবিবুর রহমান মানিক বলেন, আমার ছেলে মেরাজই সব দেখাশোনা করে। আমি মাঝে মধ্যে সহযোগিতা করি। সন্তানরা ভালো কিছু করতে পারলে সব বাবা-মাই খুশি হন। আমরাও তার সফলতায় খুশি।
 
মুরাদনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, মুরাদনগর উপজেলা ছোটবড় ৫৮টি ছাগলের খামার রয়েছে। এর মধ্যে নতুন উদ্যোক্তা মেরাজের মতো তরুণরা আমাদের সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা। তাকে দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হচ্ছে। শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই কর্মসংস্থান গড়ে তুলেছে। এতে নিজেরা বেকারমুক্ত হচ্ছে, অন্যদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, ছাগলের মাংস উৎকৃষ্ট মাংস। এটার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা মনে করি, মেরাজের মতো তরুণের দ্বারা শুধু বেকারত্বই দূর হচ্ছে না, পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হচ্ছেন। আমরা মেরাজকে সাধুবাদ জানাই।