চট্টগ্রামে ফটিকছড়িবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে উন্নীত করার চূড়ান্ত বাজেট অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
এই অর্জনকে ফটিকছড়ির স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা বলে মনে করছেন স্থানীয় জনসাধারণ, জনপ্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দৈনিক খবর সংযোগ পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পর সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি নজরে আসে। অবশেষে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও একনেক সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রাপ্ত হয় ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০০ শয্যা প্রকল্প।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
তারা হাসপাতালের বর্তমান অবকাঠামো, চলমান চিকিৎসাসেবা, মানবসম্পদ ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, যিনি এই প্রকল্প অনুমোদনের পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, আন্তরিক প্রচেষ্টা ও প্রশাসনিক তৎপরতা ফটিকছড়ির এই বহুল প্রত্যাশিত প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
একনেকে অনুমোদন ও নতুন নির্মাণ পরিকল্পনা:
ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রস্তুতকৃত প্রস্তাবনা একনেক সভায় উত্থাপন করা হলে, তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনুমোদনের পরপরই নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে দ্রুততম সময়ে। ১০০ শয্যার এই হাসপাতাল নির্মাণ সম্পন্ন হলে ফটিকছড়ি উপজেলার প্রায় ৭ লাখ ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষ উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পাবেন।
এই হাসপাতাল শুধু উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী হাটহাজারী, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি অঞ্চলের জনগণের জন্যও একটি রেফারেল স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উন্নয়ন ছিল আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। জনগণের চাহিদা, ভৌগোলিক বাস্তবতা ও রোগীর চাপ বিবেচনায় সরকার ১০০ শয্যার বাজেটের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনোজ চৌধুরী বলেন, ১০০ শয্যার বাজেটের চূড়ান্ত অনুমোদন ফটিকছড়ির স্বাস্থ্যসেবাকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এতে শুধু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নয়, আশপাশের এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোরও সেবা মান উন্নত হবে। আমাদের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত হবে এবং আগামী জানুয়ারী থেকে নতুন ভবনের অসামাপ্ত কাজের সূচনা করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
দৈনিক খবর সংযোগ পত্রিকার ফটিকছড়ি প্রতিনিধি মো. আজগর আলী মনে করেন, এই খবরটি তার "ঐতিহাসিক সাফল্য”। তিনি দৈনিক খবর সংযোগ পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।