গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ১৫টি মামলা দায়ের করা হলো।
সর্বশেষ সড়কে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ জনকে আসামি করে আরো একটি মামলা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো: সাজেদুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠি নামক এলাকায় গোপালগঞ্জ-বরিশাল আঞ্চলিক সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ৭৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো ৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
এনসিপির সমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত দায়ের করা মোট ১৫টি মামলায় ১৬ হাজার ২০৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এই মামলার পূর্বে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি মামলা করা হয়েছিল। মামলাগুলো গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় দায়ের করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দায়ের করা নতুন মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুলাই এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কের সমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যে আসামিরা বিভিন্ন সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন।
এদিন সদর উপজেলার কাঠিবাজার ও এর আশপাশের এলাকায় গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট আঞ্চলিক সড়কের ওপর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা লাঠিসোঁটা, রড, ইটপাটকেল, কাঠের বাটাম, গাছ কাটার ইলেকট্রিক করাতসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ঘটনাস্থলের দোকানপাট ভাঙচুর করেন। এছাড়া রাস্তার পাশে থাকা সরকারি গাছ কেটে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।
ওই ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এ ঘটনায় জেলায় কয়েক দফা কারফিউ জারি করা হয়।