কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩০০ টাকা বেতনে শিক্ষকতা শুরু করেন মো.ওয়াহিদুল হক। তিনি দীর্ঘ ৪১ বছর শিক্ষকতা করেন। শিক্ষকতার শেষে দিনে বিদ্যালয়ের সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অশ্রুসিক্ত বিদায় নেন। এদিকে প্রিয় শিক্ষককে বিদায় দিতে স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩ টায় বিদ্যালয়ের জমসেদ মিয়া মিলনায়তনে তাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৮৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি স্কু্লের সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ দিন ধরে একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। সরকারি বিধি অনুযায়ী সোমবার ১১ আগস্ট ছিলো শেষ কর্মদিবস। নানা আয়োজনে বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় শিক্ষককে অবসর জনিত বিদায় দেন। এসময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ৪১ বছর যাবত বিদ্যালয়ে মেধা ও শ্রম দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেছেন। অসংখ্য শিক্ষার্থীকে পাঠদানের মাধ্যমে পৌচ্ছে দিয়েছেন সফলতার উচ্চ স্থানে। উনিই একমাত্র শিক্ষক যিনি ভৈরব উপজেলায় ৪০ বছর ৭ মাস একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। বিদায় দিনে সবাই ওনার সুস্থতা কামনা করেন।
বিদায়ী শিক্ষক মো.ওয়াহিদুল হক বলেন, ১৯৮৫ সালে মাত্র ৩০০ টাকা বেতনে স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করি। প্রতিদিন রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যালয়ে এসেছি। সর্বদা শিক্ষার্থীদের আমার ক্ষুদ্র মেধা ও জ্ঞান দিয়ে শিক্ষা প্রদান করেছি। দীর্ঘ ৪১ বছর শিক্ষকতা জীবনে অনেক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়েছি। তারা অনেকেই জীবনে সফল হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সফলতা দেখে খুব আনন্দ হয়। বিদায় বেলায় স্কুলের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বলবো তোমরা জীবনে মানুষের মত মানুষ হবে। যেন মানুষ তোমাদের কর্মের মাধ্যমে মূল্যয়ন করতে পারেন।
আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. নুরুল আলম শেখের সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. খুশরু ভুঁইয়া, বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মামুনুর রশিদ, একেএম শরীফ উদ্দিন, সাকিনা বেগম, আমিনুল ইসলাম, সৈয়দ আলাউদ্দিন, ইকবাল হোসেন, সহকারী শিক্ষক তনিমা বেগম, রাজীবুল হাসান, মোরাদ ভূঁইয়া, রাজু ভূঁইয়া, রিপন ভূঁইয়া, জুনাইদ মিয়া, মাহবুব গাজী প্রমূখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম।