দেশজুড়ে পরিচিত ও ঐতিহাসিক কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে আবারও মিলেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকালে ৪ মাস ১৮ দিন পর মসজিদের ১৪টি লোহার দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে ৩২ বস্তা টাকা।
সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় দানবাক্স খোলার কার্যক্রম। এই বিশাল অঙ্কের টাকা গণনার কাজে অংশ নেয় মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, পার্শ্ববর্তী জামিয়া এমদাদিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট প্রায় চার শতাধিক মানুষ।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাধারণত প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্স খোলা হয়। তবে এবার সময় কিছুটা বেশি হওয়ায় (৪ মাস ১৮ দিন) দানবাক্স খোলা বিলম্বিত হয়। মানুষের দানের চাপ এতটাই বেশি ছিল যে, নতুন করে আরও দুটি দানবাক্স সংযুক্ত করা হয়েছে মসজিদ কমপ্লেক্সে।
এর আগে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল, ৪ মাস ১২ দিন পর দানবাক্স খোলা হলে রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এবারও মিলতে পারে একই রকম বা তার চেয়েও বেশি পরিমাণ দান।
দানবাক্স খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলী এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুললেই দেখা যাচ্ছে বিশাল অঙ্কের অর্থ, যা দেশের অন্যান্য মসজিদের তুলনায় ব্যতিক্রমী। মসজিদ সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব অর্থ মসজিদ পরিচালনা, মাদরাসা ও এতিমখানা পরিচালনা, গরিব-দুঃখীদের সাহায্যসহ নানা সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়।
কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদ শুধু একটি উপাসনালয় নয়, এটি এখন এক মহাআস্থার কেন্দ্র। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এখানে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সেই আস্থাই প্রতিবছর বাড়াচ্ছে দানের পরিমাণ।