কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে শনিবার (৩০ আগস্ট) খোলা হয়েছে দানবাক্স, যেখানে উঁকি দিয়েছে টাকা, স্বর্ণ বা বৈদেশিক মুদ্রার পাশাপাশি এক মায়ের হৃদয়বিদারক চিঠি। চিঠির ভেতরে মায়ের বুকের হাহাকার, সন্তানের জন্য প্রার্থনা আর জীবনের অমূল্য আকাঙ্ক্ষা পরিস্ফুটিত হয়েছে।
চিঠির শুরুতেই মা লিখেছেন, প্রিয় পাগলা বাবা, আমি আপনার একজন ভক্ত এবং এরপর আসে তার দীর্ঘ প্রার্থনা ও মিনতি। মা তার সন্তানকে প্রেমের বাঁধন থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করছেন, ছেলেকে কলঙ্ক থেকে রক্ষা করার আকুতি জানাচ্ছেন। আর মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সুস্থ জীবন, ভালো পাত্র এবং বিশেষ করে বিসিএসের একটি সিটের জন্য প্রার্থনা করছেন।
এটি শুধু এক মায়ের প্রার্থনা নয়, বরং বাংলার প্রতিটি মায়ের অবিরাম ভালোবাসা এবং তাদের সন্তানদের জন্য উৎসর্গীকৃত জীবনের প্রতিচ্ছবি। চিঠির ভাষা সাদাসিধে, তবে মমতায় ভরা ‘পাগলা বাবা গো, নতুন কইরা আর কোনো বিপদ-আপদ না দিয়া বাসার কাজটা শেষ করাইয়া দিয়া বাসায় উঠাইয়া দেন এইটুকু দয়া করেন।’
এছাড়া, মসজিদের দানবাক্স খোলার সময়, প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে ৩২ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এদিকে, ১২ এপ্রিল পূর্বে খোলার সময় পাওয়া গিয়েছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার এবং বৈদেশিক মুদ্রা। নতুন তিনটি দানবাক্স যোগ হওয়ায় এবার দানের পরিমাণ শত কোটির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
বর্তমানে, পাগলা মসজিদের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এফডিআর, যার লভ্যাংশ দিয়ে গরিব, অসহায় এবং অসুস্থদের জন্য সহায়তা করা হয়।
দানবাক্স খোলার সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনাবাহিনী, আনসার, জামাতের জেলা আমীরসহ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।