গাজীপুরে কাটি বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানা ও বিপুল নিষিদ্ধ পলিথিনের শপিং ব্যাগ জব্দের পরও মহানগরীর পূর্ব ভুরুলিয়া আবাসিক এলাকায় অনুমোদনহীন ভবনে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকার লোকজনের আপত্তি কানে তুলছেন না কারখানার মালিক কবির শাহাদাৎ। এছাড়া শুধু নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনই নয়, কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত বায়ু ও শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ তারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, মহানগরীর পূর্ব ভুরুলিয়া আবাসিক এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত কারখানা স্থাপন করে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করে যাচ্ছে কাটি বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানার মালিক কবির শাহাদাৎ। কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়া আবাসিক এলাকায় কারখানা স্থাপন করে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য উৎপন্ন করছেন তিনি। জনবহুল আবাসিক এলাকায় কারখানা পরিচালনা করায় স্থানীয় বাসিন্দারা মৌখিকভাবে আপত্তি জানালেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত করেনি।
এছাড়া যে ভবনে কারখানা পরিচালনা করা হচ্ছে, সেই ভবনেরও কোন অনুমোদন নেই বলে জানা গেছে। গত ১৫ জানুয়ারি ভবনের অনুমোদিত নকশা চেয়ে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নোটিশ জারি করলেও কোন জবাব দেয়নি ভবন মালিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষ।
পরে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিদর্শন করলে মালিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
আবাসিক এলাকায় কারখানা পরিচালনা করে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। কারখানার নির্গত কেমিক্যাল মিশ্রিত ধোঁয়া ও শব্দ দূষণের কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ এবং ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারখানা বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অনুরোধ করছি।
এদিকে, গত ১০ মার্চ গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কারখানার মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানাসহ ১২ হাজার কেজি পলিথিন ব্যাগ জব্দ করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন এ অভিযান পরিচালনা করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছুদিন পর আবারও পলিথিন উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
কাটি বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানার মালিক কবির শাহাদাৎ বলেন, আমার এখানে অবৈধ কোন কিছু থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আমি এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।
গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান জানান, কারখানার স্থাপনার বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। এ ব্যাপারে তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কোন জবাব দেয়নি। আমরা আরও একটি নোটিশ জারি কারার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্তোষজনক জবাব না পেলে পরবর্তীতে তাদেরকে উচ্ছেদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) আরেফিন বাদল বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কারখানাকে জরিমানা করেছি। সে সময় কারখানার কর্তৃপক্ষকে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। যেহেতু তারা উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখেননি এবং বিষয়টি অবহিত হয়েছি। ওই কারখানার বিরুদ্ধে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।