নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পল্লী অঞ্চল থেকে শিকারি পাখি হিসেবে পরিচিত সাদাকালো রঙের সুন্দর ডাহুক পাখি প্রায় বিলুপ্তির পথে। কয়েক বছর আগেও কোন কোন এলাকায় মাঝে মাঝে ডাহুকের ডাক শোনা গেলেও এখন আর শুনতে পাওয়া যায় না। দেখাও মেলে না তেমন একটা।
বছর বিশেক আগেও বিলে মাছ ধরতে গেলে কিংবা কৃষি কাজে গেলে ডাহুক পাখির দেখা মিলতো অহরহ। পোষা ডাহুক খাঁচায় বন্দী করে শিকারিরা ফাঁদ পেতে খাল-বিল, বন থেকে মুক্ত ডাহুকগুলো শিকার করতেন। এক সময় যখন পাখি শিকারকে আইনগতভাবে তেমন একটা অপরাধমূলক কাজ মনে করা হতো না, সে সময়ে শিকারিরা প্রতিনিয়তই ফাঁদ পেতে ডাহুক শিকার করতেন। কিন্তু বর্তমানে যেকোন পাখি শিকার করা আইনত অপরাধ বলে গণ্য করা হয়।
তবে এখন পাখি শিকার করা থেকে বিরত থাকলেও কেন যেন দিনদিন আড়াইহাজার এলাকা থেকে বেশ কিছু পরিচিত পাখির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। এর মধ্যে ডাহুক পাখি প্রায় বিলুপ্তই হয়ে গেছে বলা যায়।
এমনও সময় গেছে, যখন খাল-বিল, নদী-নালা, ঝোঁপঝাড়- এমন কি বর্ষাকালে পাট ক্ষেতের মধ্যে ও অহরহ ডাহুক পাখির দেখা মিলতো। কোন কোন সময় হাঁসের মতো এক ঝাঁক ছানা নিয়েও ডাহুক পাখির জোড়া মানুষের সামনে পড়তো। তখন বাচ্চা ছেলেরা শখ করে ডাহুক পাখির ছানা ধরে নিয়ে পোষার জন্য খাঁচায় বন্দী করে রাখতো।
সূঁচালো লম্বা ঠোঁটের অধিকারী ডাহুক পাখিকে বিষাক্ত সাপের সাথে যুদ্ধ করে সাপকে মেরে ফেলতেও দেখা গেছে। সেসব ডাহুক পাখি আজ যেন কোথায় হারিয়ে গেছে।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষের বসবাসের জন্য বাড়িঘর নির্মাণ করতে গিয়ে ঝোঁপঝাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। তাছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার বেশির ভাগ এলাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে বর্ষায় পানি হয় না। এ সমস্ত কারণে ডাহুক পাখির বিচরণ ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে গেছে বলে ডাহুক পাখি বিলুপ্ত- এমনটাই মনে করেন এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা।