উৎসব আমেজে সারাদেশে বিজয় দিবস পালিত

আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বার্ষিকী। সারাদেশে, সর্বস্তরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন মহান বিজয় দিবস। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেয়ার দিন। ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর কবল থেকে দেশ মুক্ত হওয়ার এ দিনটিকে আজ বিজয় দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করছে জাতি।

এ উপলক্ষে সারাদেশে পালিত হচ্ছে বিভিন্ন আয়োজন। নিচে বিভিন্ন জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য ও ছবিতে আয়োজনগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-।

টাঙ্গাইল
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ৩১ বার তোপধ্বনি ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় টাঙ্গাইলে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে।

১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সকালে জেলা স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরিফা হক ও পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

বিজয় দিবস উপলক্ষে পরে আলোচনা সভা, দোয়া, মহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।

ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস। দিবসটি উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সদর থানা চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা করা হয়।

সকাল সাড়ে ৭টায় শহরের প্রেরণা একাত্তর চত্বরের স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। রাষ্ট্রের পক্ষে প্রথমে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রথিন্দ্রনাথ রায় ও জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ আলফাজ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসনেআরা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ ইকবাল মাখন, সহ-সভাপতি এম. রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শিপলু জামান, সাধারণ সম্পাদক রাজিব হাসান, সহ সরকারি দপ্তর, বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

এছাড়াও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, জেলা শিশু একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে মহান বিজয় দিবস।

ফটিকছড়ি
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে যথাযোগ্য মর্যাদা, ব্যাপক উৎসাহ–উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হচ্ছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিবস।

বিজয় দিবস উপলক্ষে ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাত ১২টা ১ মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।

ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফটিকছড়ি উপজেলার কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধ, ‘স্পর্ধিত অহংকার’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম, ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ভূজপুর থানার ওসি বিপুল চন্দ্র দে এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পুনরায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ফটিকছড়ি উপজেলা সংলগ্ন ফটিকছড়ি করনেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়। জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় মসজিদ, মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।

বিজয় দিবস উপলক্ষে ফটিকছড়ি সরকারি হাসপাতালে রোগীদের জন্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা, শিশুদের আনন্দে অংশগ্রহণ বাড়াতে বিনোদন কেন্দ্র ও শিশু পার্কগুলোতে বিনা টিকিটে প্রবেশের ব্যবস্থাও রাখা হয়।

সিরাজগঞ্জ
মুক্তিযুদ্ধে যাদের প্রাণের বিনিময়ে বাংলার বুকে অর্জিত হয়েছে নতুন ভূখণ্ড, জাতির সেই সূর্য সন্তানদের স্মরণে সিরাজগঞ্জে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পৌর শহরের বাজার স্ট্রেশন এলাকায় বিজয় সৌধে তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। একই সাথে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ বীর সন্তানদের স্মরণ করতে বিজয় সৌধে ভিড় করেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক মো. আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা দল, এলজিইডি, সমবায় অধিদপ্তর, সমাজসেবা কার্যালয়, বিআরটিসি, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ একে একে বিজয় সৌধ প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। এদের হাতে ফুল, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিজয় সৌধে শ্রদ্ধা ও ফুলের পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে। এতে ফুলে ফুলে ভরে উঠে শহীদদের বেদি।

অপরদিকে, আজ সকাল ৮টায় মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্তকরণ, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সম্মিলিত কুচকাওয়াজ, শারীরিক কসরত প্রদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. আমিনুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু। এছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পরে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষে কুচকাওয়াজ, শারীরিক কসরত ও ডিসপ্লেতে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।


নালিতাবাড়ী
বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে উদ্‌যাপিত হয়েছে। সারাদেশের ন্যায় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) নালিতাবাড়ী উপজেলায় দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।

দিবসটির সূচনা হয় প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নালিতাবাড়ী উপজেলা শহীদ মিনার ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ানা আফরিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনিসুর রহমান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) আফসান আল আলম, নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামানসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। এছাড়াও উপজেলা বিএনপি, শহর বিএনপি ও তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ, উপজেলা প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পরে সকাল ৯টায় তারাগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এরপর সুশৃঙ্খল কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, আনসার, স্কাউট ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

কুচকাওয়াজ শেষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পৃথকভাবে ডিসপ্লে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে, অতিথিবৃন্দদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় এবং কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। দিনব্যাপী এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নালিতাবাড়ীতে মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় যথাযোগ্য মর্যাদায় নানান আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় শহীদ হাসান চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিয়ে দিনের শুভসূচনা করা হয়। 

এ দিবসকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে স্থানীয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং
সিভিল সার্জন ডা.হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরপর সকাল সকাল সাড়ে ৮টায় চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ এবং ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়। কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

শেরপুর
যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেরপুরে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), শেরপুর-এর উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বিজয় উৎসব, র‍্যালি, কুচকাওয়াজ ও ব্যান্ড প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের ৫৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনসিসি সদর দপ্তরের নির্দেশনা ও উদ্যোগে সারা দেশের ন্যায় শেরপুর জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। দিবসটি আরও মহিমান্বিত ও আকর্ষণীয় করে তুলতে বিএনসিসির মহাপরিচালকের দিকনির্দেশনায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় একযোগে বিজয় উৎসব, র‍্যালির আয়োজন করা হয়।

সকাল ১১টায় শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়াম থেকে বিজয় উৎসব র‍্যালি বের হয়। র‍্যালিটি শহরের থানা মোড় প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে মিলিত হয়। র‍্যালিতে শেরপুর সরকারি কলেজ প্লাটুন, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ প্লাটুন এবং শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমি প্লাটুনের ১০০ জন ক্যাডেটের সমন্বয়ে একটি ব্যান্ড দল অংশগ্রহণ করে। এতে জেলার বিভিন্ন প্লাটুনের এক হাজারেরও বেশি বিএনসিসি ক্যাডেট অংশ নেন।

কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ও শেরপুর জেলার পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন শেরপুর সরকারি কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনের পিইউও মো. আল-আমিন, শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমি বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার টিইউও মো. হাবিবুর রহমান, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনের পিইউও তৃষা রাণী সিংহ রায় এবং শেরপুর বিএনসিসি প্লাটুনের সামরিক প্রশিক্ষক ল্যান্স কর্পোরাল নুর শাহ খান।

এছাড়াও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে বিএনসিসি’র একটি সুসজ্জিত কন্টিনজেন্ট অংশগ্রহণ করে। কুচকাওয়াজটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি প্রাঙ্গণ সংলগ্ন প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হয়।

গোবিন্দগঞ্জ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দীর্ঘদিনের রীতি ভঙ্গ করে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে আসাদের শ্রদ্ধা জানানো শেষ হবার আগেই উপজেলা প্রশাসন কতৃক আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার অভিযোগে শহীদ মিনারে হট্টগোল শুরু হয়। 

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের গরুহাটিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে, শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন না করা ও বিএনপি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পুষ্পস্তবক অর্পণ না করতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মোনাজাত করে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করায় হইচই ও হট্টগোল শুরু হয়। 

শ্রদ্ধা জানাতে আগতদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিনের রীতি ভঙ্গ করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায়ে যারা এসেছিলেন, তাদের পুস্পস্তবক অর্পণের আগেই এক মিনিট নিরবতা পালন করে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করায় ইউএনও এর উপস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে উপস্থিত নানা শ্রেণি পেশার লোকজন।

পরে উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, গণ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এক মিনিট নিরবতা পালন, শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করেন।  

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানার কাছে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি, আমরা নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত জায়গায় সকল রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম পালন করেছি। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হয়েছে, সহকারী রিটার্নিং হিসাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে পুষ্পমাল্য অর্পণের কোনো সুযোগ নেই।’ 

আড়াইহাজার
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়।

কর্মসূচির মধ্যে ছিল তোপধ্বনি,  কুচকাওয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। 

বীরমুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুর রহমান সভাপতিত্ব করেন। আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মান্নান মোল্লা, ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক ভুঁইয়া, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোস্তাফিজুর রহমান ইমন, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। 

দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে জেলা শহরের ফারুকী পার্কের স্মৃতি সৌধে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। 

পরে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক শারমীন আক্তার জাহান, পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন পুলিশ সুপার শাহ্ মো. আব্দুর রউফ। পরে গার্ড অফ অনার এর মধ্য দিয়ে একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। 

পরে শহীদ বেদিতে বিভিন্ন সরকারি, বে-সরকারি দপ্তর, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পরে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহাবুব শ্যামল ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপির) দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মূর্খ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ।

মুকসুদপুর 
সারাদেশের ন্যায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সারাদিনব্যাপী নানা আয়োজনে বিজয় দিবস পালিত হয়। 

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ আশিক কবিরের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এস এম মাহাতাব উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আবুল হাছনাত, মুকসুদপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন। 

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

মুকসুদপুর থানা ময়দানে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয়ে, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। 

সকালে উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন, মুকসুদপুর থানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুকসুদপুর পৌরসভা, উপজেলা বিএনপি সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দল।

মঠবাড়িয়া
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধ ও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরে ব্যতিক্রমধর্মী ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়েছে। মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ, শহীদদের স্মৃতি এবং গ্রাম বাংলার চিরচেনা জীবনধারা ফুটিয়ে তুলতে থিমভিত্তিক ডিসপ্লে উপস্থাপন করে।

এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের বাণী পাঠ, শহীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর প্যারেড প্রদর্শন ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও শান্তির প্রতীক পায়রা ওড়ানো হয়।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন মঠবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, মঠবাড়িয়া থানা অফিসার ইনচার্জ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও জনসাধারণ।

সাতক্ষীরা 
নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়েছে। দিবসের শুরুতে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়।

ভোর থেকে থেকেই সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের শহীদ মিনারে প্রথমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর একে একে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সকাল ৮টায় সাতক্ষীরা জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পুলিশ, আনসার, বিএনসিসি, স্কাউটস ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়। গ্যালারিতে হাজারো দর্শক এই আয়োজন উপভোগ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে তিনদিনব্যাপি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া দিনটি উপলক্ষে হাসপাতাল, জেলখানা ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন এবং জেলার বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। 

টুঙ্গিপাড়া
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। একই সময়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় সকল সরকারি-বেসরকারি ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। সকাল ৯টায় টুঙ্গিপাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

পরে উপজেলা সংলগ্ন মাঠে, পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, গীতাপাঠ করে, জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহিরুল আলম এবং বিশেষ অতিথি টুঙ্গিপাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী।

এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড্ডয়ন করেন প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল আমিন হালদার, ওসি আইয়ুব আলী, কৃষি কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম, মৎস কর্মকর্তা দেবাশীষ বাচার সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। পরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইউএনও জহিরুল আলম শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মাঠে কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন ডিসপ্লে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং একই সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

ভান্ডারিয়া 
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬.৩০ মিনিটে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। 

পরে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রেহেনা আক্তার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জ্বল হালদার, অফিসার ইন চার্জ দেওয়ান জগলুল হাসান, উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি ও বিএনপি মনোনীত পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন। এছড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিএনপির নেতৃবৃন্দ, ভান্ডারিয়া প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও তার অংঙ্গ সংগঠন ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জে মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে উদ্‌যাপন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মুন্সীগঞ্জ শহরের কাচারীস্থ শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন সর্বস্তরের মানুষ।

প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা নুরমহল আশরাফী। এরপর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম সহ সর্বস্তরের মানুষ। এসময় শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সকাল নয়’টায় শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৩ দিন ব্যাপী আড়ম্বরপূর্ণ বিজয়মেলা (চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের) উদ্বোধন এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা পর্যায়ে যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা, বীরমুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা।

এ উপলক্ষে জয়পুরহাট শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে প্রথম প্রহরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা বিএনপি, জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি, জেলা জাতীয় যুব শক্তি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জয়পুরহাট স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। তারপর সেখানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা শিক্ষার্থীরা ও খেলোয়াড় ক্লাব তাদের ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আল মামুন মিয়া, পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জেসমিন নাহার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিএনপি মনোনীত জয়পুরহাট -১ আসনে এমপি প্রার্থী মাসুদ রানা প্রধান, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ ওহাব, জেলা জামায়াতের আমির ও জামায়াত মনোনীত জয়পুরহাট -১ আসনে এমপি প্রার্থী ফজলুর রহমান সাঈদ, সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক আশরাফুল ইসলাম, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাশরেকুল আলম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম সবুজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসিবুল হক সানজিদ প্রমুখ।

ডিসপ্লে প্রদর্শন শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা।

কমলনগর

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। 

উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এ সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নিরবাহী কর্মকর্তা মো. রাহাত উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রামগতি সার্কেল মোহাম্মদ শামসুল আলম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মে. আরাফাত হুসাইন, কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  ফরিদুল আলম, উপজেলা কৃষি অফিসার মো, ইকতারুল ইসলাম, বীরমুক্তযোদ্ধা আবুনুর সেলিম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. নুরুল হুদা চৌধুরী। জামায়াতের আমির মওলানা আবুল খায়ের, জেএসডির সভাপতি- অধ্যক্ষ আবদুল মোতালেব, এছাড়া অনুষ্ঠানে কমলনগর প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন আয়োজকরা।

ভাঙ্গা 
ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। সূর্যো উদয়ের সাথে সাথে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন থেকে সকাল সাতটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, জানদি বধ্যভূমি ও মাধবপুর শহীদ জহুরুলের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সকাল আটটায় পৌরসভার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে প্রদর্শনসহ একই মঞ্চে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গণসংবর্ধনা প্রদান করে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আবু জাহের, সহকারী কমিশনার ভূমি সাদরুল আলম, অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল আলিমসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ রজনী গন্ধা দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বরণ করেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন সেলিম, জামায়াত ইসলামির প্রার্থী মওলানা সরোয়ার হোসেন, পৌর আমির ডা. এনায়েত হোসেন, এনসিপি সমন্বয়ক আশরাফ হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ডিসপ্লে প্রদর্শন শেষে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এছাড়াও বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে তিন দিনের বিজয় মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কাপাসিয়া
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়।

এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা, দোয়া মহফিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ও শহীদদের অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

নরসিংদী

নরসিংদীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। 

দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সকাল সাড়ে ৮টায় নরসিংদী স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত কুচকাওয়াজ প্রদর্শন ও সালাম গ্রহণ এবং মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নরসিংদী কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়।

সকাল ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-ফারুকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

বিকেলে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পৌরপার্কে তিনদিনব্যাপী বিজয় মেলা উদ্বোধন, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে ক্রীড়া অনুষ্ঠান এবং নরসিংদী জেলা স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল খেলা ছিল উল্লেখযোগ্য। 

FJ