শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়ায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কাথুরিয়া, পালেরচরসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের শত শত মানুষ এতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয় কৃষক মো. আক্কাছ আকন বলেন,‘আমার সমস্ত দো-ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না’।
কাথুরিয়ার গৃহিণী সাজেদা বেগম জানান, ‘ভাঙনের সময় ঘর এত দ্রুত ভেঙে পড়ে যে মানুষজন নিজেদের জিনিসপত্র সরাতেও সময় পায় না। প্রতিদিনই ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে’।
পড়াশোনার ক্ষতির কথা জানিয়ে কলেজ পড়ুয়া সজিব মোল্লা বলেন, ‘ভাঙনের কারণে অনেক বন্ধু স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না। কারও বই-খাতা ভেসে গেছে, কারও বাসা নদীতে চলে গেছে। আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে’ ।
পালেরচর বাজারের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিদিন দোকানঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে, দেখার কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যাবে।’
পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, ‘অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পালেরচরের অসংখ্য পরিবার বাস্তুচ্যুত হবে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। আমরা সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই ভাঙন সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।’
উল্লেখ, জাজিরার পালেরচর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙন পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। কল্যাণ মোল্লার কান্দি থেকে শুরু করে কাথুরিয়া হয়ে পালেরচর বাজার পর্যন্ত নদীর প্রবল স্রোত এলাকাবাসীর জীবনযাত্রাকে চরম সংকটে ফেলেছে। বিশেষ করে কাথুরিয়া এলাকায় ভাঙন এখন মারাত্মক রূপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফসলি জমিও নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। ভাঙন এত দ্রুত ঘটছে যে অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি সরানোরও সুযোগ পাচ্ছে না। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়।