কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক এলাকার ৩ কৃষকের গোয়াল থেকে তালা ভেঙে ৫ গরু চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার কালিকাপ্রসাদ দক্ষিণপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর সবাই যখন ঘুমিয়ে যায়, ঠিক সেই সময়ে একটি চক্র কালিকাপ্রসাদ দক্ষিণ পাড়া সুবেদ আলী ঘাট এলাকায় রাত ২টা দিকে একই পাড়ার ৩ কৃষকের গোয়াল ঘরে শিকলের তালা ভেঙে ৫টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরবর্তীতে বাহিরে শব্দ শুনে কৃষকরা ঘুম ভেঙে তাদের গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখেন, শিকলের তালা ভাঙা এবং গোয়াল ঘরে গরু নেই।
এ সময় কৃষক মুর্শেদ মিয়ার ২টি গাভী ও ১টি বাছুর গরুসহ মোট ৩টি গরু (যার আনুমানিক মূল্য ৬ লাখ টাকা), রুবেল মিয়ার একটি গাভী (আনুমানিক মূল্য ২ লাখ ২০ হাজার টাকা) এবং আসমত আলীর একটি ষাড় গরু (আনুমানিক বাজার মূল্য দেড় লাখ টাকা) চুরি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করলেও গরুর সন্ধান মেলেনি।
ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেন, এলাকার কিছু অসৎ লোক এই চুরির সাথে জড়িত রয়েছে। তা না হলে এক রাতে একই সাথে একই পাড়ার ৫টি গরু গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। এক মাস আগে কালিকাপ্রসাদ এলাকার দক্ষিণপাড়ার গুদারাঘাট এলাকা উসমান মিয়ার ২টি, ফারুক মিয়ার ১টি ও জুম্মান মিয়ার ২টি গরু চুরি হয়।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মুর্শেদ মিয়া বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর গোয়াল ঘর তালা দিয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ রাত ২টার দিকে বাইরে লোকজনের শব্দ শুনে ঘুম থেকে উঠে গোয়ালে গিয়ে দেখি আমার ৩টি গরুই নেই।
আমার ২টি গাভি ও ১টি বাছুররের আনুমানিক বাজার দর ৬ লাখ টাকা। কৃষি কাজের পাশাপাশি গরু পালন করে আমাদের সংসার চলতো। এখন তো সবই নিয়ে গেলো দুর্বৃত্তরা। প্রশাসনের কাছে চুরি হওয়া গরুর সন্ধান চান তিনি।
ভুক্তভোগী আরেক কৃষক রুবেল মিয়া কয়েক মাস আগে ২ লাখ টাকা দিয়ে একটি বিদেশী জাতের গাভি গরু কিনে লালন পালন করছেন। কিন্তু এক রাতেই সব শেষ হয়ে গেলো তার।
আরেক ভুক্তভোগী আসমত আলী বলেন, পাশের ঘরের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে আমার গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখি গরু নেই। পরে আমরা নদীর পাড়ের দিকে গেলে একদল জেলে জানায়, কয়েকজন লোক ৫টি গরু নৌকায় তুলে ভৈরবের দিকে নিয়ে গেছে। কিছু বললে তারা আমাদের গলা কেটে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। পরে জীবনের ভয়ে আর কিছু বলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহান আহমেদ বলেন, আজকের মত এক মাস আগেও একই এলাকা থেকে ৩ জনের ৫টি গরু রাতের আধারে চুরি হয়েছে। এই চক্রটি গ্রামের কিছু অসৎ লোকদের সাথে নিয়ে গরু চুরি করে থাকে। এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে ভৈরব নৌপুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান জানান, গতকাল রাত ৩টার দিকে খবর পাই একই পাড়া থেকে ৩ কৃষকের ৫টি গরু চুরি হয়েছে। ঘটনাটি জানার পরই আমাদের টহল টিম নদীতে সন্ধান করে। কিন্তু সে সময়ে নদীতে কোন নৌকা পাওয়া যায়নি। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।