মানিকগঞ্জে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের ক্যাফে হাইওয়ের অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ভয়েস’।
এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন স্থানীয় সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কাজ করা তরুণ সাংবাদিক এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা ডিজিটাল নিরাপত্তা ও অনলাইন সুরক্ষার বিভিন্ন দিক, ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ বা থ্রেট মডেলিং, নিরাপদ ব্রাউজিং ও যোগাযোগ, এনক্রিপশন, দুই ধাপ বিশিষ্ট লগইন ব্যবস্থা, ডিজিটাল স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিন এবং প্রাইভেসি সচেতনতা বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
এ সময় ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা ছাড়া মতপ্রকাশের স্বাধীনতা টেকসই হয় না। তাই অনলাইনে সুরক্ষিত থাকতে ডিজিটাল সাক্ষরতা অর্জন এখন অত্যন্ত জরুরি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা একে অপরের পরিপূরক। নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ গড়তে সবার ডিজিটাল সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
কর্মশালায় ডিজিটাল সুরক্ষার বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন ভয়েস প্রোগ্রাম অফিসার প্রিয়তা ত্রিপুরা।
তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে আমাদের অনলাইন নির্ভরতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা প্রতিনিয়ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্য নিয়ে কাজ করছেন। তাই তথ্য সুরক্ষা ও সচেতন ডিজিটাল আচরণ এখন অপরিহার্য, যাতে তাদের কাজের নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকে। এছাড়াও তিনি গণমাধ্যমকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীদের অনলাইন ও ডিজিটাল সুরক্ষার বিভিন্ন বাধা, বাধাগুলো উত্তরণের উপায়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করেন।
কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তায় সতর্ক থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গণমাধ্যমকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীদের। নিজেকে নিরাপদ রাখতে সেফটি টুলসগুলো ব্যবহার করা জরুরি। পাশাপাশি নিজেদেরকেও সংবেদনশীল হতে হবে। যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো সংবাদ প্রকাশের পুর্বে সকল তথ্য, ছবি বা ভিডিও যাচাই করা উচিত, সেক্ষেত্রে সংবাদ বা রিপোর্টের স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
কর্মশালায় আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন, ভিপিএন, টর ব্রাউজারে নিরাপদ ব্রাউজিং, এনক্রিপ্টেড বার্তা ও ডেটা ব্যাকআপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এছাড়া অংশগ্রহণকারীরা ভাইরাসযুক্ত লিংক চেনার উপায়, মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গোপনীয়তা রক্ষা, মাঠপর্যায়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পাবলিক ওয়াইফাই এড়ানো ও জিও-লোকেশন ট্র্যাকিং বন্ধ রাখা ইত্যাদি বিষয়ে অনুশীলন করেন।