পাউবো’র নবনির্মিত ব্রিজ ভেঙে সওজ’র কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ!

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু সাত মাস আগে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু একই স্থানে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কন্যাদহ গ্রামে এই অপচয়মূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্মিত ব্রিজটি এখন ভেঙে ফেলতে হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

কণ্যাদহ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, জিকে সেচ খালের ওপর ২০২৪ সালের জুলাইয়ে অর্থাৎ সাত মাস আগে নির্মাণ করা হয় ব্রিজটি। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করে। জিকে সেচ খালের উপর নির্মিাত ব্রিজের গায়ে এখনও মোড়ানো রয়েছে নতুন পলিথিন।

কিন্তু একই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এক কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই স্থানেই আবার একটি কালভার্ট নির্মাণ করবেন তারা। যে কারণে নতুন ব্রিজটি ভেঙে আবারও কালভার্ট করার চুড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। ফলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও দুই বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সরকারের গচ্চা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। 

ওই গ্রামের কৃষক আরশেদ আলী বলেন, ব্রিজটি নির্মাণেও করা হয়েছে অনিয়ম। সড়ক অনুযায়ী ব্রিজ না করায় প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। যখন এটি নির্মাণ করা হয় তখন তারাই বলেছিল কয়েকদিন পর আবারও নতুন ব্রিজ হবে। আমার নিষেধ করার পরও তারা নিম্নমানের এই ব্রিজটি নির্মাণ করেছেন।

ছবি: সংগৃহীত

বাসিন্দা রাশেদ হক বলেন, কালভার্ট যদি করবে তাহলে ব্রিজ করার দরকার ছিল না। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ সমন্বয় করলে সরকারের বাড়তি টাকা গচ্ছা যেত না।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, জিকে সেচ খাল যেহেতু আমাদের আওতাধীন তাই আমরা ব্রিজটি নির্মাণ করেছি। কারণ ভাঙা ব্রিজটির কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছিল। সড়ক ও জনপথ যদি ওই স্থানে ব্রিজ করে আমাদের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে করতে হবে। কিন্তু তারা এনওসি না নিয়েই স্টিমেট করেছে। আগামীতে সওজ বা এলজিইডি যদি জিকে সেচ খালের ওপর ব্রিজ করে আমাদের সঙ্গে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এই ভুল বোঝাবুঝি হবে না। আমরাও সচেষ্ট থাকব।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হাফিজুর রহমান বলেন, ব্রীজটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকার সময় করা। ব্রীজটি যখন নির্মাণ করা হয় সেসময় আমার আগের নির্বাহী প্রকৌশলী দু’দফা চিঠিও দিয়েছিলেন কিন্তু তাদের মাঝে সমন্বয় হয়নি। ব্রিজটি নতুন হলেও এলাকার মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তাই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দূর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হবে। এতে আশা করি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।