রাস্তায় সন্তান জন্ম দিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন নারী, নেই পিতৃপরিচয়

“রাখে আল্লাহ, মারে কে” এই চিরন্তন প্রবাদ যেন সত্যি হয়ে ধরা দিলো খুলনার পাইকগাছায়। রাস্তার এক কোণে হিরো শোরুমের বিপরীতে এস এম সাউন্ড দোকানের সিঁড়িতে হঠাৎ ভেসে এলো এক তরুণীর চিৎকার। চিৎকার শুনে সবাই দৌড়ে গিয়ে দেখতে পান, এক নতুন জীবনের আগমন।

এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী, যার পরিচয় জানা নেই কারও, রাস্তায়ই প্রসব করলেন একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু। কারও সাহায্য ছাড়াই জন্ম হলো ২.৬ কেজি ওজনের সেই নিষ্পাপ প্রাণের। মা হয়েও তিনি জানেন না নিজের সন্তানের কথা। জানা নেই সন্তানটির বাবার পরিচয়।

প্রথমে চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় ব্যবসায়ী লাবণ্য লাবু। সঙ্গে যোগ দেন গ্রাম্য চিকিৎসক আব্দুল হালিমসহ স্থানীয়রা। পরে দ্রুত তারা নবজাতক ও প্রসূতিকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এখন দুজনেই সুস্থ ও নিরাপদে আছেন চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাকিলা আফরোজ এবং নার্স রেহানা পারভীন ও হামিদা খাতুন বলেন, মা ও শিশু উভয়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে প্রসবের কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, পাগলী মা শিশুটিকে অস্বাভাবিকভাবে চেপে ধরছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মা ও সন্তানকে আপাতত আলাদা রাখা হয়েছে।

এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন, সহকারী কমিশনার ভূমি ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, “আমরা প্রথমেই মেয়েটির পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে সরকারি ব্যবস্থায় শিশুটির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সে লক্ষ্যে সমাজসেবা অফিসকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি।”